সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী:
যুগের পর যুগ কেটে গেলেও উন্নয়নের ছোয়া আর সুবিধা থেকে বঞ্চিত চিলমারীসহ কয়েকটি উপজেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ। দেশের বিভিন্ন স্থানে উন্নয়ন হলেও তথ্য অনুযায়ী ১৯৬৫ সালের দিকে রেলপথ স্থাপন হলেও উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি চিলমারীতে। জন্ম থেকে যেন পেছিয়ে চিলমারীর রমনা বাজার ও বালাবাড়িহাট রেল স্টেশন ও রেলপথ। স্বাধীনতার অর্ধশত বছর কেটে গেলেও ভাঙ্গাচোরা স্টেশন দুটিতে লাগেনি আধুনিকতার ছোঁয়া। চিলমারী রমনা থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত লাইনের বেশির ভাগ স্থানে পাথরের অস্তিত্ব নেই। ট্রেন আসলেও থাকছে ধীরগতি। দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়েই চলাচল করছে লোকাল ট্রেনটি। ট্রেনের গতির কারনে স্থানীয় ভাষায় ভেসে বেড়াচ্ছে হামার ট্রেন চলে গরুর গাড়ির নোহান। বছরের পর বছর থেকে ভোগান্তিতে চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুরসহ আশাপাশের এলাকার লক্ষ লক্ষ মানুষ।
জানা গেছে, চিলমারী উপজেলায় দুটি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে বালাবাড়ি হাট ও রমনা বাজার স্টেশন। ৭১’ স্বাধীনতার পর থেকে রয়েছে বেহাল দশায়। লাগেনি উন্নয়নের ছোয়া। স্টেশনের সাথে রেলপথেও লাগেনি উন্নয়নের হাওয়া। কুড়িগ্রাম সদর থেকে চিলমারীর রমনা বাজার স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ৩২ কিলোমিটার রেলপথের বেহাল দশার কারণে ঝুঁকি নিয়ে বছরের পর বছর ট্রেন চলাচল করছে এই রুটে। ফলে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা নিয়েই যাত্রীরা এই রেলপথ দিয়ে যাতায়াত করে। এই রুটে রেলের চাহিদা থাকলেও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি পড়ছে না ফলে যুগের পর যুগ কেটে গেলেও দিন বদলের পালায় উন্নয়নের হাওয়া লাগেনি ফলে ভাঙ্গাচোরা টিন শেড ঘর আর ভবনেই চলছে রেলের কার্যক্রম। উপজেলার বালবাড়িহাট এলাকার বালাবড়িহাট রেল স্টেশনটি একটি ছোট্ট ভবন থাকলেও নেই সংস্কার ফলে ভবনটি দেখলেও মনে হয় এটি যেন একটি পরিত্যক্ত ভবন। এদিকে উপজেলার রমনা বাজার স্টেশনটি ঐতিহ্য স্টেশন হলেও এখানে এখনো গড়ে উঠেনি একটি ভবন, একটি টিনশেড রুম থাকলেও সেটিও অনেক বছর থেকে জরাজীর্ণ, বৃষ্টি আসলে পানি চুয়ে পড়ে, নেই যাত্রীদের জন্য যাত্রী ছাউনি। চিলমারীর স্টেশন দুটি প্রাচীন স্টেশন হলেও বাড়েনি যাত্রীদের সেবার মান। যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, রেলের প্রতি কেন এই অবহেলা এটি ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। স্থানীয়রা বলেন, রমনা বাজার আর বালবাড়িহাট রেল স্টেশনে শুধু চিলমারীর মানুষ নয় রৌমারী, রাজিবপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষজন অপেক্ষা করে ট্রেনের জন্য কিন্তু লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। দুরদূরান্ত থেকে আসা যাত্রীদের এখানে অপেক্ষা হলেও নেই ওয়েটিং রুম, তৈরি হয়নি মাতৃদুগ্ধ কর্নার। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে এখনো তৈরি হয়নি ছাউনি। শুধু তাই নয় কুড়িগ্রাম সদর থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত রেলপথের বেহাল দশার কারণে সময়মত ট্রেন যাতায়াত না করায় নানা ভোগান্তি আর বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। কুড়িগ্রাম থেকে চিলমারী রমনা বাজার পর্যন্ত লাইনের সমস্যা স্বীকার করে বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক লালমনিরহাট বলেন, দ্রুত চিলমারী পর্যন্ত মেরামতের কাজ শুরু হবে এবং স্টেশন গুলোর উন্নয়নের কাজ হবে।
চিলমারীর দুটি স্টেশনের গায়ে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া: ট্রেন চলে গরুর গাড়ির গতিতে
