প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও প্রথম দিনে কলকাতার বাজারে আশানুরূপ দাম পায়নি ‘পদ্মার ইলিশ’। গত সোমবার রাতে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পৌঁছায় সাড়ে আট টন ইলিশ। রাতেই এই ইলিশ পৌঁছে যায় কলকাতার পাতিপুকুর এবং হাওড়ার মাছের আড়তে। এদিন সকালে প্রথম নিলামে পাইকারি আড়তদারদের আশা ছিল- এক কেজি সাইজের ইলিশের দাম উঠতে পারে ১২০০ থেকে ২০০০ রুপি পর্যন্ত। কিন্তু কলকাতার বাজারে প্রত্যাশিত দাম পাইনি ‘পদ্মার ইলিশ’। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারতে ‘পদ্মার ইলিশ’ পর্যাপ্ত না এলেও সারাবছর ডায়মন্ডহারবার, দিঘা, মহারাষ্ট্র, মিয়ানমারের ইলিশ পাওয়া যায়। তবে স্বাদে গন্ধে আলাদা মাত্রা যোগ করে বাংলাদেশের ‘পদ্মার ইলিশ’। কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বাজারে যার জন্য পদ্মার ইলিশের দামেও ফারাক দেখা যায় আকাশ পাতাল। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন- চলতি বছর ‘পদ্মার ইলিশ’ মাছ কলকাতায় বাজারজাতও হয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের বেশ কিছুদিন পরে। ফলে বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও মেলেনি আশানুরূপ দাম। মঙ্গলবার সকালে হাওড়া পাইকারি মাছের বাজারে পদ্মার ইলিশ নিলামে উঠলে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬০০ রুপি, ৭০০-৮০০ গ্রাম ৭০০ রুপি এবং ১ কেজি ওজনের মাছ ১০০০ রুপি প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে যা ১১০০ থেকে ১২০০ রুপি প্রতি কেজি বিক্রি হতে পারে। ভারতের ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ সমকালকে বলেন, আমদানি জটিলতায় গত বছরের মতো চলতি বছরেও একাধিক পার্বণ পেরিয়ে বেশ কিছুটা দেরিতে এসেছে পদ্মার ইলিশ। তা ছাড়া সাইজেও বেশ ছোট। তবে পরিমাণে কম হওয়ায় চাহিদা বেশি হবে এমনটাই আশা করা হয়েছিল। কিন্তু এ দিন চাহিদার তুলনায় পাইকারি বাজারে দাম মিলেছে অনেকটাই কম। পূজা যত এগিয়ে আসবে এবং ইলিশের সাইজ কিছুটা বড় হলে দাম ততই বাড়বে বলে আশা করছেন তারা। আরেক পাইকারি ব্যবসায়ী রাজেশ লাল খোটি বলেন, যেহেতু বাজারে এই মুহূর্তে স্থানীয় ইলিশ বেশ কিছুটা কম দামে পাওয়া যাচ্ছে, তার জন্য প্রথম দিনে হয়তো ‘পদ্মার ইলিশে’ দাম পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশের ইলিশের যে ধরনের চাহিদা রয়েছে তাতে পূজা এগিয়ে এলে দাম বাড়তে থাকবে। এদিকে পদ্মার ইলিশ কম দামে মেলায় খুশি খুচরা বিক্রেতারা। তপন দাস নামে এক বিক্রেতা বলেন, ‘স্থানীয় পর্যায়ে গ্রাহকদের সামলাতে হয় আমাদেরই। পদ্মার ইলিশের চাহিদা প্রবল, বাঙালি অপেক্ষা করে থাকে, কিন্তু দাম বেশি থাকে সাধারণ মানুষ কিনতে পারে না। তবে এবার দাম বেশ কিছুটা কম থাকায় সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকবে।’ তিনি জানান, পাইকারি বাজারের থেকে মাত্র ১০০ রুপি বেশি দামে খুচরা বাজারে এই ইলিশ বিক্রি করবেন তিনিসহ অন্যান্য বিক্রেতারা। এদিকে ভারতের আমদানিকারকরা বলছেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই ৪০ থেকে ৫০ টন পর্যন্ত ইলিশ সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকবে ভারতে। নির্দিষ্ট এই সময়ের মধ্যে ভারত আমদানি করতে পারবে ২৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ।