নাগেশ্বরী প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে ২ বিঘা জমির রোপা আমন ফসলের ক্ষেত ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করে নষ্ট করেছে প্রতিপক্ষ। পরে চাষ দেয়া ট্রাক্টরটি আটক করেছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও এলাকাবাসী। এ ঘটনায় নাগেশ্বরী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ এরশাদ আলী ব্যাপারী। পরে আটক কৃত ট্রাক্টর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মারফত থানায় দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া গ্রামে। অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার মৃত মহির উদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে এরশাদ আলী ব্যাপারী ও মৃত আব্বাছ আলী ব্যাপারীর ছেলে আনছার আলী ব্যাপারী পরিবারের সাথে রায়গঞ্জ বাজারের রোকন চৌধুরী, রবিউল ইসলাম চৌধুরী এবং পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম সাপখাওয়া এলাকার আজিজার রহমান মানিক চৌধুরীদের সাথে ৫ একরের অধিক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিলো। তবে রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া ব্যাপারীপারা এলাকার ওই জমি এরশাদ আলী ব্যাপারী ও আনছার আলী ব্যাপারী গং ভোগদখল করে আসরছ। দখলভোগের প্রেক্ষিতে চলতি আমন মৌসুমেও ওই জমিতে এরশাদ আলী ব্যাপারী রোপা আমন চাষ করেন। চাষকৃত ওই আমন ধান হওয়ার সময় হয়েছে। এ অবস্থায় শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রবিউল ইসলাম চৌধুরী, রোকন চৌধুরী, মৃত সাবান আলী মিস্ত্রি’র ছেলে মিজানুর রহমান, মতিউর রহমান, আমিনুর রহমান, আব্দুর রহিম মিস্ত্রি, আমিনুর রহমানের ছেলে আশরাফুলসহ ১০-১২জন নারী পুরুষ তাদের লোকজন লাঠি শোঠা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে জমি জবর দখলের চেষ্টা করে জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষ করে ২ বিঘা জমির ফুল আসা ধান ক্ষেত গুড়িয়ে দিয়ে ফসল নষ্ট করে দেয়। এ অবস্থা দেখে ক্ষতিগ্রস্থ এরশাদ আলীর পরিবারসহ এলাকার লোকজনের চোখে পড়লে তারা ফসল নষ্ট করতে বাধা প্রদান করেন। এ সময় মিজানুর রহমানসহ তাদের লোকজন অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হত্যার হুমকী প্রদান করেন। পরে আরও লোকজন জড়ো ট্রাক্টর আটক করলে প্রতিপক্ষ লোকজনসহ ট্রাক্টরের ড্রাইভার ট্রাক্টর রেখে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান দীঘদিন যাবৎ এই দ্বন্দ্ব চলে আসছে। আর এরশাদ ব্যাপারীরা ধান লাগালেই চৌধুরী পক্ষের লোকজন রাতের আঁধারে এসে কীটনাশক ছিটিয়ে পাকা ধানও নষ্ট করে দেয়। এতে লাখ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ক্ষতিগ্রস্থ এরশাদ আলী জানায়, ধারদেনা করে ধানের চারা রোপন করেছিলেন তিনি। কিন্তু ফুল আসা ধানের চারাগুলো চৌধুরীবাড়ি ও মিজানুরের লোকজন ট্রাক্টর দিয়ে নষ্ট করে ফেলেছে। এখন সর্বশান্ত তিনি। তিনি আরও জানান এর আগেও অনেকবার এসব জমির শীষ বের হওয়া ধানী জমিতে কীটনাশক ছিটিয়ে নষ্ট করেছেন তারা। কিন্তু কখনও এর বিচার পাননি। তাই এর সুষ্ঠু বিচার কামনা করেন এরশাদ আলী ও তার পরিবার।
এদিক ঘটনার দিন আটক করে রাখা ট্রাক্টর পরদিন রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে স্থানীয় রায়গঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান দীপ মন্ডল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ট্রাক্টরটি তার জিম্মায় নিয়ে চৌকিদারের মাধ্যমে থানায় জমা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে রায়গঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান দীপ মন্ডল বলেন, সরেজমিন তদন্ত করে দেখেছি প্রায় ধান আসার ফসলগুলো ট্রাক্টর দিয়ে নষ্ট করা হয়েছে। ঘটনাটা আসলে ন্যাক্কারজনক। ঘৃণিত কাজ। এটা মানুষের উপর অত্যাচার করা ছাড়া আও কিছুই নয়। এটা মানুষের বিবেকে নাড়া দেয়ার মতো একটা ঘটনা। আর আটককৃত ট্রাক্টরটি স্থানীয়দের সাথে নিয়ে তাদের সাথে কথা বলে আমার জিম্মায় নিয়ে থানায় জমা করা হয়েছে।
নাগেশ্বরী থানার এএসআই শিমুল চন্দ্র বর্মন বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার বিকালে সরেজমিন ঘুরে দেখেছি। ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ওসি স্যার রংপুরে আছেন। স্যার আসার পর দুই পক্ষ চাইলে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের সাথে নিয়ে বসে মিমাংসা করা হবে।
নাগেশ্বরীতে ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষ করে ২ বিঘা জমির আমন ফসল নষ্ট
