সিদ্দিকুর রহমান শাহীন, স্টাফ রিপোর্টার:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার খড়িবাড়ি জিসি- খোচাবাড়ি ভায়া ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন পরিষদের সড়কের তালেরতল জোলের (ছড়া) উপর নির্মিতব্য সেতুটি চার বছরেও নির্মান কাজ সম্পন্ন হয়নি। ফলে জনগূর্ভোগে পড়েছে অন্তত ১০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ। প্রতি দিন-রাতে ছড়াটি পারাপারে ড্রামের ভেলা হচ্ছে একামাত্র উপায়। জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে পারাপারেও ঘটে দূর্ঘটনা।
ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকোশলীর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার খড়িবাড়ি জিসি- খোচাবাড়ি ভায়া ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন পরিষদের সড়কের ৬৭০০ মিটার চেইনেজে ৪২ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১৯ এপ্রিল। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল। সেতুটি নির্মাণে প্রাক্কালীন ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি ২৬ লাখ ১৪ হাজার ৩২০ টাকা। কাজটি পায় কুড়িগ্রামের ঘোষপাড়ায় অবস্থিত নুফা- জেডএইচডি-জেভি নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
কাজ শুরুর চার বছরে পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রীজটি দু’পাড়ে শুধুমাত্র দেয়াল তৈরি করে অন্যান্য কাজ করতে ঢিলেমি করায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় খোচাবাড়ী, রাঙ্গামাটি, ভাঙ্গামোড়, নগরাজপুর, ভেরভেরি, সুবারকুটি, চন্দন পাক, আরডিআরএস, তালুকদার পাড়া, সর্দ্দার পাড়া, হোলোখানা, রক্ষীকান্ত ও আবাসন প্রকল্প এলাকার ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষজনের যাতায়তে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় নজির হোসেন, মনসুর আলী, মতিয়ার রহমান, ফারুক হোসেন ও আমিনুল ইসলাম জানান, বর্তমানে তারা অনেক কষ্ট করে ফসল সংগ্রহের সময় সেতু না থাকায় ছোট ছোট ভুড়া ও ড্রামের ভেলায় করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করে থাকেন। অনেকে পানিতেও পড়ে যায় মাঝেমধ্যে।
স্থানীয় এনজিও কর্মি আমিনুল জানান, প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার লোকজনের ছড়াটি পারপারে প্রভাব পড়ছে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা ও বিশেষ করে কৃষিকাজে। মিশুক চালক আমিনুল ইসলাম জানান, বর্ষা আসলেই সেতুটি না থাকায় জীবন মরণের সমস্যা হয়ে যায়।
ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাবু জানান, ব্রীজটির নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শেষ না করায় জনদূর্ভোগ বেড়েই চলেছে। মজার ব্যাপার হলো আগে ঐ জায়গায় একটা সেতু ছিল, সেটা নষ্ট হওয়ায় ভেঙ্গে নতুন করে এই সেতুর কাজ হচ্ছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজের তদারকিতে থাকা মিস্ত্রি আব্দুল হালিম ও মাইদুল ইসলাম জানান, যেভাবে ঠিকাদার কাজ করতে বলেন তারা সেভাবেই কাজ করেন। ব্রীজের কাজ করতে সময় লাগার কারণ তারা জানেন না।
উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রহমান জানান, ব্রীজটি নির্মাণ স্থানে পানির কারণে কাজ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া ব্রীজটির প্রাক্কলনের সময়ে ওই এলাকায় পানি নিষ্কাশনের ও প্রতিরোধ বাঁধ দেওয়ার বাজেট না থাকায় ব্রীজটি নির্মাণে ধীরগতি ও সময় লাগছে। তবে শুষ্ক মৌসুমে কাজ শেষ করার আশা করা যায়।