নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ঢেউটিন ও অর্থ বিতরন দীর্ঘদিন পরে শুরু হলেও বিতরনে অনিয়ম ও তালিকায় প্রভাবশালীদের নাম থাকায় জনমনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। এছাড়াও তিনতলা ভবনের মালিক পেয়েছেন গরীবের এই টিন। গরীবের এই ঢেউটিন ও অর্থের মধ্যে ভাগ বসানোর অভিযোগ রয়েছে এক নেতার বিরুদ্ধেও। শুধু তাই নয় তালিকা তৈরি ও তদন্তের নামেও গোপনে অর্থের লেনদেনেরও অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধিনে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে গরীব, অসহায় ও গৃহহীনদের জন্য ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ঢেউটিন ও অর্থের বরাদ্দ দেয়া হয়। চিলমারী উপজেলার জন্য ১১৬ বান্ডিল ঢেউটিন ও ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে আবেদনের পেক্ষিতে ইউএনও কর্তৃক তদন্ত সাপেক্ষে ৫৮টি পরিবারকে তালিকা ভুক্ত করা হয়। পরিবার প্রতি ২ বান্ডিল টিন ও ৬হাজার টাকা দেয়ার সিন্ধান্ত নেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সিন্ধান্ত মতাবেক গত অর্থবছরের ঢেউটিন ও জনপ্রতি ৬হাজার টাকার চেক আনুষ্ঠানিক ভাবে বিরতন শুরু করেন শুক্রবার (১৫ আগস্ট)। বিতরন শুরু হলে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ পায়। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায় এই তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে এবং তালিকায় রমনা ইউনিয়নের একজন প্রভাবশালী ঠিকাদার তিনতলা ভবনের মালিককেও ঢেউটিন ও টাকার চেক নিয়েছে তার নাম আসাদুল ইসলাম। শুধু আসাদুল ইসলাম নয় তালিকায় বেশকিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তির নাম রয়েছে। জহিরন নামে একজন বলেন, হামার নাই ঘর নাই ট্যাকা হামরা পাই না, আর যামার ট্যাকা, বাড়ি আর জমি আছে ওমরাই পায়, সব ট্যাকার খেলা রে বাবা। তালিকায় নাম রয়েছে চিলমারী ইউনিয়নের বিএনপি’র সভাপতি রিয়াজুল হক জোদ্দারের তিনি এলাকার একজন প্রভাবশালী ব্যাক্তি যদিও তিনি জানান তিনি তেনার জন্য আবেদন করেনি। একই ইউনিয়নের তালিকায় নাম রয়েছে দেনার আলী, স্থানীয়দের তথ্য মতাবেক তেনার বড় বড় ঘর রয়েছে এবং সরকারী ভাবেও ইতি পূর্বে ঘর পেয়েছে এমন ব্যাক্তির নাম তালিকায় কেমনে উঠলো কারা তদন্ত করলো, নাকি সব টাকার বিনিময়ে নাম উঠেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, সরকারী ভাবে ইউএনও স্যারের মাধ্যমে তদন্ত করে আমাদের তালিকা পাঠানো হয়েছে এখানে আমাদের কি ভাবে হাত দেই, তবে তালিকায় যাদের নাম রয়েছে সকলে পাওয়ার যোগ্য নয়। বিভিন্ন সূত্র জানান, এই তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে এটি পুনরায় সঠিক তদন্ত করলে অর্ধেক নামেই হয়তো অযোগ্য হিসাবে প্রমানিত হবে এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নে নামের বিনিময়ে অর্থের খেলা হয়েছে। টিন তোমার টাকা হামার এমন শ্লোগান আছে মন্তব্য করে নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন মন্তব্য করেন এগুলো নাম উঠাতে টাকা খেলা হয়ে থাকে তাই যোগ্য ব্যাক্তিরা টাকা দিতে পারে না তাদের নামও উঠে না। প্রভাবশালীর নাম রয়েছে স্বীকার করে রমনা মডেল ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আকা বলেন, তদন্ত করে অফিস থেকে আমাদের কাছে তালিকা পাঠাইছে এখানে আমাদের কি কোন করনীয় থাকে। তবে যে নাম ও ব্যাক্তিকে নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তাদেরকে টিন ও টাকার চেক দ্রুত ফেরৎ দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, আবেদনের পেক্ষিতে আমরা তদন্ত করে চেয়ারম্যানের তালিকা পাঠাইছি তারা যদি প্রভাবশালী বা যোগ্য নয় এমন ব্যাক্তির নাম সুপারিশ করে থাকে সেটি তারাই বলতে পারবে।
চিলমারীতে ঢেউটিন ও অর্থ বিতরণে অনিয়ম
