চিলমারী প্রতিনিধি:
উত্তাল রূপ নিতে শুরু করেছে ব্রহ্মপুত্র। বইছে স্রোত। পানিতে ভাসছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল। তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাাঞ্চল। দ্বীপের মতো জেগে থাকা জায়গায় গাদাগাদি করে বাস করছে গৃহপালিত পশুর সঙ্গে মানুষজন। কিন্তু এমন নিদারুণ কষ্টের মাঝে ‘মড়ার উপর খঁড়ার ঘা’য়ের মতো দেখা দিয়েছে নৌ ডাকাতদের আতঙ্ক। আর তাই শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে চরের মানুষ। বন্যায় তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। এই সময় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডাকাতি করে দ্রুত পালাতে পারে বলে ভাটির দিকের কয়েকটি ডাকাত দল সক্রিয় হয়ে উঠে। তবে ডাকাতদের প্রতিহত করে চরবাসীর সম্পদ রক্ষায় বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানান পুলিশ প্রশাসন। এই দুর্ভোগের সময় নৌ ডাকাতির মতো উপদ্রব যেন না হয়। নির্বিগ্নে থাকতে পারে সেই প্রত্যাশাই করছে চরাঞ্চলের লাখো মানুষ। সম্প্রতি ব্রহ্মপুত্রে রাজিবপুর ও রৌমারী রুটে প্রক্যাশে ডাকাতির ঘটনা ঘটায় এবারে আতঙ্ক বেড়েছে চলাঞ্চলের মানুষের মাঝে। উপজেলার বজড়াদিয়ার খাতা, ফেসকা, খাউরিয়া, অষ্টমীরচর, শাখাহাতি, কড়াইবারিশালসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে মানুষের সাথে কথা বলে তাদের আতঙ্কের কথা জানা গেছে। বজড়াদিয়ারখাতা চরের উজ্জল জানান, এই চরের চার পাশেই পানি, এখন বিভিন্ন চরে কোরবানির জন্য কিছু ষাড়গরু পালন করা হয়। আর কিছু না নিলেও ডাকাতেরা শুধু বাড়ির সাথে নৌকা লাগিয়ে দিয়ে সব গরু নিয়ে যায়, তাই বেশ কিছু স্থানে উপরে বাঁশের তৈরী চরগ বানিয়ে মই দিয়ে সেখানে উঠে চারপাশে লাইট দিয়ে দেখে দুর থেকেই বুজতে পারি কোনটা ডাকাতের নৌকা। আর নৌকা দেখামাত্রই একটি সংকেট বাজানো হয় তখন চরের মানুষ এক হয়ে ডাকাত প্রতিহত করার ব্যর্থ চেষ্টা চালাই। চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, এই সমস্ত চরে দিনেইও অনেক সময় ডাকাতি হয়। কয়েকদিন আগে আমার ইউনিয়নের কড়াইবালিশাল ঘাটের পাশেই দিনের বেলায় ডাকাতি হয়েছে এছাড়াও কোন না কোন চরে সিরিয়ালের নৌকা, জ্বালানী তেলের নৌকা, মালবাহি নৌকাও ডাকাতের হাতে ধরা পড়লে রক্ষা নাই। তবে এবারে পুলিশ প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং পুুলিশ সুপারের নির্দেশে বিভিন্ন চলাঞ্চলে পুলিশের টহল রয়েছে, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে চরাঞ্চলের মানুষের সাথে বিভিন্ন সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে নৌ-থানা ও বন্দর থানার ওসি জানান, আমাদের থানায় লোকবল কম, আছে যাতায়াতের নৌকার সমস্যা। তারপরও আমরা মানুষের যানমালের নিরাপত্তা দিতে সব সময় প্রস্তুত রয়েছি।
কথা হলে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, আতঙ্কের কিছুই নাই ইতি মধ্যে ৬ জন নৌ-ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকিদের গ্রেফতাদের জন্য সেনাবাহীনির সহযোগিতায় সাঁড়াশি অভিযান চলছে। এছাড়াও পুলিশের টহল রয়েছে এবং জনসচেতনা বৃদ্ধির জন্য সমবিনিময় সভাও করা হচ্ছে।
চিলমারীর চরাঞ্চলে নৌ-ডাকাত আতঙ্ক
