ভূরুঙ্গামারী প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর সড়কগুলোয় দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে অনুমোদনহীন যানবাহন। এসব যানবাহনের বেপরোয়া গতি, উচ্চ শব্দ ও নিয়ন্ত্রণ জটিলতার কারণে হরহামেশাই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়া নির্গত কালো ধোঁয়া পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। পথচারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। অনুমোদনহীন যানবাহন নিয়ন্ত্রণে নেই কোনো আইনি পদক্ষেপ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বলছে ভটভটি, ট্রলি ও ট্রাক্টর অনুমোদিত যান্ত্রিক যানবাহন নয়। স্থানীয়দের দাবি সড়ক থেকে এসব যানবাহন তুলে দেয়া হোক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শ্যালো মেশিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে তিন চাকার ভটভটি, পাওয়ার টিলার দিয়ে বানানো হয়েছে ট্রলি আর ট্রাক্টরের পেছনে ডালা লাগিয়ে বানানো হয়েছে ট্রাক। অনুমোদনহীন এসব যানবাহন থেকে প্রচন্ড শব্দ ও কালো ধোঁয়া বের হয়। প্রচন্ড শব্দের কারণে চালক অন্য যানবাহনের হর্ণ শুনতে পাননা। বিকট শব্দ পথচারী ও সড়কের পাশের বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। ভটভটি ও ট্রলিতে নেই হেড লাইট। তবুও এসব যানবাহন রাতের বেলা সড়কে চলাচল করে। ট্রলি ও ট্রাক্টরের চাকায় বড় বিট থাকে। গ্রামীণ ও আঞ্চলিক সড়কে বিট যুক্ত চাকার যানবাহন চলাচল করায় সড়ক দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এগুলো থেকে কালো ধোঁয়া নির্গত হয়। যা পরিবেশের ভারসাম্য বিনাশ করে পথচারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। অধিকাংশ যানবাহন চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। মাসোহারার বিনিময়ে এসব যানবাহন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সড়কে চলাচল করে।
আখতারুজ্জামান লাকু নামের এক শিক্ষক বলেন, ট্রলিতে হেড লাইট থাকেনা। তবু রাতের বেলা সড়কে ট্রলি চলাচল করতে দেখা যায়। যা পথচারী ও চালকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
পল্লী চিকিৎসক আব্দুল লতিফ বলেন, ট্রলি ও ভটভটি থেকে প্রচন্ড শব্দ ও কালো ধোঁয়া বের হয়। যা মানব দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এছাড়া চলন্ত ট্রলি ও ভটভটি চালকের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।
বলদিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সমাজ সেবক মোখলেছুর রহমান বলেন, ট্রাক্টর ও ট্রলির সামনের চাকায় বড় বিট থাকে। যা ট্রাক্টর ও ট্রলিকে সামনে এগোতে সাহায্য করে। বিট যুক্ত চাকার কারণে গ্রামীণ সড়ক নষ্ট হয়ে যায়।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক বলেন, বিভিন্ন জায়গায মাসোহারা দিয়ে ভটভটি, ট্রলি ও ট্রাক্টরের মালিকরা সড়কে এসব যানবাহন চালান।
ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ বলেন, ট্রাফিক বিভাগ অনুমোদনহীন যান নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে অনুমোদনহীন যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস বলেন, অনুমোদনহীন যানবাহন বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কুড়িগ্রাম জেলার সহকারি পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ভটভটি, ট্রলি ও ট্রাক্টর অনুমোদিত যান্ত্রিক যানবাহন নয়। এগুলো যানবাহনের মধ্যে পড়ে না। এসবের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন এসব নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
ভূরুঙ্গামারীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অনুমোদনহীন যানবাহন
