• মে ৯, ২০২৪ ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ

কুড়িগ্রামে পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দী ৩২টি গ্রামের ২০হাজার মানুষ

জুন ১২, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার:

কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার রৌমারী উপজেলায় আকষ্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩২টি গ্রামের প্রায় ২০হাজার মানুষ। পানিতে তলিয়ে গেছে ১০৭ হেক্টর জমির ধান,পাট এবং শাকসবজি । এছাড়াও রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় দুর্ভােগ পড়েছে সাধারণ মানুষ। পানিবন্দি এসব মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা নৌকা ও কলা গাছের তৈরি ভেলা।উপজেলার ২১টি বিদ্যালয় পানি উঠায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

সরেজমিন দেখা যায়,উপজেলার জিঞ্জিরাম নদী দিয়ে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের লাল পানির কারণে চার ইউনিয়নের ৩২গ্রামের প্রায় ২০হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এরমধ্য যাদুরচর ইউনিয়নের পুরাতন যাদুরচর, কাশিয়াবাড়ী, লালকুড়া, বিক্রিবিল, চর লাঠিয়ালডাঙ্গা, বালিয়ামারী,শ্রীফলগাতি, খেওয়ারচর, বকবান্দা, আলগারচর, পাহাড়তলী, যাদুরচর পূর্বপাড়া, তিনঘড়িপাড়া, বকবান্ধা। 

রৌমারী সদর ইউনিয়নের বাওয়াইরগ্রাম, ঝাউবাড়ি, দুবলাবাড়ী, রতনপুর,কলাবাড়ি, বড়াইবাড়ি, চুলিয়ারচর, উত্তর বারবান্দা, ইজলামারী, ফুলবাড়ি, ভুন্দুরচর, নয়ারচর, গায়ালগ্রাম, চাদারচর, খাটিয়ামারী, মাদারটিলা, পূর্বইজলামারী, কড়াইকাদি ও ঠনঠনিপাড়া,

পশ্চিম মাদার টিলা, নতুন চুলিয়ারচর।

শৌলমারী ইউনিয়নের গয়টাপাড়া,বেহুলারচর,

চরবোয়ালমারী এবং দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব কাউয়ারচর, বাঘেরহাট এলাকার ২০হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

কাশিয়াবাড়ি গ্রামের কৃষক আকবর আলী বলেন,এবার আড়াই বিঘা জমিতে ধান চাষ করছি। এরমধ্য দেড় বিঘা জমির ধান কাটতে পারলও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে এক বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। এতে ২১হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

পুরাতন যাদুরচর এলাকার কৃষক হাজী আব্দুস সামাদ বলেন, হঠাৎ পাহাড়ি ঢল নামায় এলাকার সব রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এখন নৌকা আর ভেলা ছাড়া বাড়ি থেকে বের হবার কােনা উপায় নেই। ছেলে-মেয়েরা স্কুল যেতে পারছে না।  

লালকুড়া গ্রামের কৃষক আবু সাঈদ বলেন, ‘হঠাৎ বানের পানি আইসা জমিতে রাখা সব পোয়াল (খড়) ভাসাইয়া নিয়া গেছে। এখন গরুর খাওয়ামাে কি এ চিন্তায় আছি।

যাদুরচর ইউনিয়নর পুরাতন যাদুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোনালিসা

জানান, বিদ্যালয় ও বাড়িরে চারপাশে পানি উঠায় নিয়মিত স্কুল যেতে পারছি না। এতে পড়াশুনার খুব ক্ষতি হচ্ছে। 

যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন, হঠাৎ বন্যার পানিতে যাদুরচর ইউনিয়নের প্রায় ১২গ্রামের ১৭হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শনিবার ১১জুন রৌমারী ইউএনও স্যারকে সরেজমিন বন্যা কবলিত এলাকাগুলা ঘুরে দেখানাে হয়েছে।

উপজলা কৃষি কর্মকর্তা কাউয়ুম চৌধুরী বলেন, অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উপজলার ১০৭ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এরমধ্যে আউশ ধান ৪৮ হেক্টর, পাট ৪২, শাকসবজি ১২ হেক্টর এবং  ৫ হেক্টর তিল তলিয়ে গেছে। পাহাড়ি এ পানি ৫ দিন স্থায়ী হলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবার শংকা করেন তিনি।

রৌমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ২১টি বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এরমধ্য ১৩টি বিদ্যালয় যাদুরচর ইউনিয়নের।

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার মাঝে ত্রাণ সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসক মহােদয়কে জানানাে হবে।