সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী:
ঈদের নতুন পোশাক তৈরিতে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দর্জি শ্রমিকরা। কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার সর্বত্র চলছে পোশাক তৈরির ধুম। দিনরাত কাপড় ও সুতার নিপুণ বুননে তৈরি হচ্ছে ঈদের পোশাক। যা বাঙ্গালির ঈদ আনন্দের প্রধানতম উপাদান। কিন্তু এই পোশাক তৈরির নেপথ্য কারিগর যারা, তাদের কাছে ঈদের নতুন পোশাকের আনন্দ অনেকটাই ধরা ছোঁয়ার বাইরে। নিজের ক্ষেত্রেতো বটেই, এমনকি কখনো কখনো পরিবার পরিজনের জন্য ঈদের নতুন পোশাক তৈরি কিংবা কেনাকাটা একেবারেই দুরূহ হয়ে ওঠে তাদের ক্ষেত্রে।
ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত কাজ করতে হওয়ায় নতুন পোশাকতো দূরের কথা ঈদের নামাজ পর্যন্ত পড়তে পারেন না অনেক শ্রমিকরা। উপজেলা সদরের বিভিন্ন পোশাক তৈরি কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। কর্মরত দর্জি শ্রমিকরা জানান প্রয়োজনের তুলনায় এমনিতেই কাপড় তৈরির পারিশ্রমিক অত্যন্ত কম। সেই সঙ্গে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত থাকে কর্মব্যস্ততা। দুয়ে মিলে তাদের জন্যে নতুন পোশাকের ঈদ উদযাপন হয়ে ওঠে বেশ কষ্টসাধ্য। এমনকি কোনো কোনো ঈদের নামাজ পর্যন্ত তাদের পড়া হয় না। রাত জেগে কাজ করার কারণে ঈদের দিন গোটা সময়টাই যায় অবসরে অথবা সেই দিনেও কাজ করতে হয় দুপুর পর্যন্ত। তবে অন্যের পোশাক তৈরির আনন্দই তারা ঈদ আনন্দ হিসেবে বেছে নেন। এ বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় উপজেলা সদরের মতো মফস্বল গ্রামগুলোতে এখনো ৬০ থেকে ৭০ ভাগ পরিবার, দর্জি নির্ভর ঈদের পোশাকের উপর নির্ভরশীল। যাদের মধ্যে সিংহভাগই দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেনীর। উচ্চমূল্যে নামিদামি দোকান থেকে যাদের পক্ষে পোশাক কেনা সম্ভব নয়। এ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের ঈদের পোশাক যোগান দেয়া দর্জি শ্রমিকদের ক্ষেত্রেই ঘটছে নিরানন্দের এ ঘটনা। এ ব্যাপারে উপজেলা সদর থানাহাট বাজার বণিক সমিতির সভাপতি জানান, এক্ষেত্রে মানবিক কারণেই দর্জি শ্রমিকদের উপযুক্ত পারিশ্রমিক বাড়ানোর পাশাপাশি কাজের সময় কমিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি।