• সোম. জুন ২৩, ২০২৫

Sakaler Kagoj

The Most Popular News Portal

ছোট দোকানই এখন বীরগঞ্জের প্রতিবন্ধী ফাতেমার সাহস-স্বপ্ন আর জীবন

সকালের কাগজ ডেস্ক:
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ৭৫ বছর বয়সেও থেমে নেই জীবনসংগ্রাম। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, স্বামীহীনতা ও চরম দারিদ্র্যতা সবকিছুকে উপেক্ষা করে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ফাতেমা বেওয়া। বাঁচার শেষ আশ্রয় হিসেবে আজ তিনি আশ্রয় নিয়েছেন একটি ছোট চা-বিস্কুটের দোকানে।

বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের দামাইক্ষেত্র গ্রামের বাসিন্দা ফাতেমা বেগম। প্রায় ৩৫ বছর আগে স্বামীকে হারিয়ে তিন কন্যাসন্তানকে নিয়ে শুরু হয় তার একক লড়াই। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েও দীর্ঘদিন হাত পেতে চলতে বাধ্য হন তিনি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের আত্মসম্মানে ভর করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন।

বর্তমানে একটি ছোট টিনের চালার নিচে সামান্য কিছু চা, বিস্কুট ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে গড়ে তুলেছেন ছোট্ট এক দোকান। প্রতিদিনের আয় খুবই সামান্য হলেও অন্যের কাছে হাত না পেতে নিজের উপার্জনে জীবন চালানোর চেষ্টা করছেন এই বৃদ্ধা।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “একসময় মানুষের বাড়ি বাড়ি সাহায্য চাইতেন ফাতেমা আপা। এখন নিজের দোকানে বসে থাকেন। এটা যেমন কষ্টের, তেমনি গর্বেরও বিষয়।”

প্রতিবেশী শিরিন আক্তার বলেন, “তিনটা মেয়েকে মানুষ করে বিয়ে দিয়েছেন, ভাবলেই চোখে পানি আসে। সরকার যদি পাশে দাঁড়াত, জীবনটা হয়তো একটু সহজ হতো।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য গোবিন্দ রায় জানান, “ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা মাঝে মাঝে সহায়তা দিই। তবে এতেই প্রয়োজন মেটে না।”

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান বলেন, “তার জন্য বয়স্কভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থায়ী দোকানের ব্যবস্থাও করার চেষ্টা করছি।”

এদিকে ফাতেমার বিষয়টি জানতে পেরে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর আহমেদ বলেন, “আমি ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে প্রাপ্য সহায়তা ও সম্মান দেওয়া হবে। ফাতেমার মতো মানুষ আমাদের সমাজের অনুপ্রেরণা।”