সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী:
বীরের বেশে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে ঝাপিয়ে পড়েছিল এদেশের বীর ছেলেরা বসে থাকেনি নারীরাও। জীবনকে বাজি রেখে এনেছেন স্বাধীনতা। মুক্তযুদ্ধের পর বীর মুক্তিযোদ্ধারা পরিবার পরিজনের সুখের জন্য নেমেছিল জীবন যুদ্ধে। ধিরে ধিরে ভাতার পরিমান বাড়ার সাথে সাথে দেখা দিয়েছিল শান্তির ছোয়া। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বীর নিবাস পেয়ে পেল বীর মুক্তিযোদ্ধারা পেলো সুখের ঠিকানা। বুধবার বিকালে আনুষ্ঠানিক ভাবে ১৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে বীর নিবাসের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে।
জানা গেছে, সারাদেশের ন্যায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মান প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রামের চিলমারীর অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ও মৃত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় বীর নিবাস। প্রথম পর্যায়ে ১২টি ও ২য় পর্যায়ে ৩৫টি বীর নিবাসের বরাদ্দ দেয়া হয়। বীর নিবাসের বরাদ্দ দেয়ায় চিলমারীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে দেখা দেয় আনন্দ। জীবনকে বাজি রেখে ৭১’ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়া যোদ্ধারা স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পর একটি সুখের ঠিকানা শান্তির নিবাস পেয়ে আজ তারা আনন্দিত। সুখের ঠিকানা দেখার আগে চলে যাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবহেলিত পরিবার গুলো আজ বীর নিবাসে দিন কাটাচ্ছে শান্তিতে। বছরের পর বছর বাঁধে বসবাসকারী মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্বাচ আলীর স্ত্রী নুরনাহার বলেন, খুব কষ্টে ছিল তাদের জীবন, খেয়ে না খেয়েই দিন কাটতো তাদের, ভাতা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বচ্ছলতা আসলেও নিজস্ব ঘর না থাকায় কষ্টে ছিল। অবশেষে বীর নিবাসের ভবন পাওয়ায় স্বচ্ছলতার সাথে ফিরেছে শান্তির ছোঁয়া। সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হাবিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিলো দেশের জন্য যারা যুদ্ধ করেছেন তাদের সম্মান কিভাবে দিতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্ত শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেখানো নয়, পুরো দেশ ও জাতির প্রতি এই সম্মান। তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই, অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস নির্মাণ করে দেয়ার জন্য। বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ রহিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা দিয়েছেন, মুজিববর্ষে বীর নিবাস নির্মাণ করে দিয়েছেন, এই ঘরে পরিবার নিয়ে এখন সুখ-শান্তিতে বসবাস করতে পারবো। সাবেক ডিপুটি কমান্ডার মোজাফ্ফ্র আহম্মেদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে পরামর্শ করে তালিকা করে দেয়ার পর ১ম ও ২য় পর্যায় মিলে ৪৭টি বীর নিবাসের বরাদ্দ আসলে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য দেয়া হয়। ইতি মধ্যে ১৭ টি ভবনের নির্মান কাজ সমাপ্ত হওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুধবার বিকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মৃত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে বীর নিবাসের চাবি হস্তান্তর করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চিলমারী সাবেক ডিপুটি কমান্ডার মোজাফ্ফ্র আহম্মেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সরদার আব্দুল হাই মিলন, উপজেলা আওয়ামী লীগ ভারঃ সাধারন সম্পাদক ও ঠিকাদার রেজাউল করিম লিচু, বিভাগীয় উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম, চিলমারী মডেল থানার এএসআই ফজলুল হক, ঠিকাদার ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তপন কুমার রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা, গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ। ১ম পর্যায়ের কাজটি করেন ঠিকাদার রেজাউল করিম লিচু ও ২য় পর্যায়ে ১টি প্যাকেজ ৫টি ভবনের কাজ করেন খাজা কনস্ট্রাকশন ঠিকাদার তপন কুমার রায়।