• এপ্রিল ৩০, ২০২৪ ৩:৫১ অপরাহ্ণ

তিস্তার পাড়ে কান্নার আওয়াজ

সেপ্টে ১৬, ২০২০

সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী (কুড়িগ্রাম):
ভাঙ্গছে তিস্তা কাঁদছে মানুষ। ভাঙ্গনের তীব্রতায় অসহায় মানুষের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে তিস্তার পাড়। কান্নায় আওয়াজে ভারি হয়ে উঠেছে আকাশ বাতাসও। চোখের পলকেই হারিয়ে যাচ্ছে শতশত মানুষের ঘরবাড়ি। সাজানো গোছানো সংসার হারিয়ে অনেকে হয়েছেন বাকরুদ্ধ। বাড়িঘর সরানোর সুযোগও পাচ্ছেনা অনেকে। বরাদ্দ না থাকার অযুহাতে হাত পা গুটিয়ে বসে দিন পাড় করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে পুরো কাশিমবাজারসহ চিলমারী ও উলিপুরের বেশকিছু এলাকাসহ বিভিন্ন স্থাপনা, বাঁধ, সড়ক নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, পানি কমার সাথে সাথে গত কয়েকদিন থেকে ভয়বহ রুপ নিয়েছে তিস্তা। তিস্তার থাবায় নিমিশেই বিলিন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, সড়কসহ বিভিন্ন স্থপনা। ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশাহারা সদ্য নদী ভাঙ্গনের শিকার পরিবার গুলো। কয়েকদিন থেকে শতশত পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করলেও মেলেনি সরকারী কিংবা বে-সরকারী কোন সহযোগীতা। চোখের সামনে নিমিশেই সাজানো ঘর সংসার হারিয়ে অনেকেই এখন বাকরুদ্ধ। ভাঙ্গনের শিকার বেশিরভাগ পরিবার শেষ সম্বল আশ্রয় টুকু হারিয়ে এখন দিশাহারা। নেই থাকার কিংবা যাওয়ার কোন স্থান তাই নদীর পাড়েই খোলা আকাশের নিচে পরিবার পরিজন নিয়ে কাঁটছে মানবেতর জীবন যাপন। সোমবার চিলমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী সুন্দরগঞ্জ ও উলিপুর উপজেলার কাশিমবাজার এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভাঙ্গনের তান্ডবলীলা। ভাঙ্গছে তো ভাঙ্গছে নিমিশেই গিলে খাচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলিজমিসহ সাজানো সংসার। ভাঙ্গনের শিকার দেলদার, শহিদ, আয়শাসহ এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েকদিনে কয়েকটি গ্রামের শতশত পরিবার নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ভাঙ্গনে বিলিন হয়েছে বাঁধ ও পাকা সড়ক। বেশ কিছু এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভাঙ্গনের তান্ডবলীলা চললেও ভাঙ্গন প্রতিরোধে মাঠে দেখা মেলেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড কিংবা কোন দপ্তরকে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফলতি দাবি করে এলাকাবাসী জানান, পানি কমার সাথে সাথে ভাঙ্গন শুরু হলেও তীব্রতা ছিলনা কিন্তু বিষয়টি জানলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড এগিয়ে না আশায় ধিরে ধিরে তিস্তা ভয়বহ রুপ ধারন করে। তিস্তা ভঙ্ককরুপ ধারন করায় নিমিশেই গিলে খাচ্ছে একের পর এক গ্রাম বিলিন হচ্ছে ঘরবাড়ি। এলাকাবাসী আরো জানান, সময় মতো পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করলে শতশত পরিবারকে হারাতে হতো তাদের আশ্রয়ের স্থানটুকু। ভাঙ্গনের তীব্রতার কথা স্বীকার করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রাম নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, কিছু জিও ব্যাগ ফেরানো হয়েছে, চাহিদা পাঠানো হয়েছে বরাদ্দ এলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি আরো জানান, যেহেতেু সড়কের কাজ হচ্ছে এবং সড়কটিও ভাঙ্গনের মুখে তাই সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য গাইবান্ধা-১ শামীম হায়দার পাটোয়ারী এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে এবং পানি শুকিয়ে গেলে নতুন করে বাঁধ দেয়া হবে। তিনি আরো জানান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের দ্রুত সহায়তা দেয়া হবে।