• মে ৯, ২০২৪ ৫:৩১ অপরাহ্ণ

ভাঙ্গন রোধে স্থানীয়রা শুরু করলেন বাঁধ নির্মাণের কাজ

ফেব্রু ২৬, ২০২৪

সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী:
বর্ষা শুরুর আগেই কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নকে নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করতে গাছের পাইলিং এর মাধ্যমে বাঁধ নির্মান শুরু করেলেন স্থানীয়রা। ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের উদ্যোগে এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় ভাঙ্গন রোধে ইউনিয়নের পশ্চিম পাশে প্রায় ৩কি: মি: জুড়ে চলছে গাছের পাইলিং এর মাধ্যমে বাঁধ নির্মানের কাজ। আশার আলো জেগেছে এলাকাবাসীর মাঝে। সরকারের কাছে সাহায্যসহ ভাঙ্গন থেকে বাঁচার জন্য দাবি জানান স্থানীয়রা।
জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে সারা বছর ভাঙ্গছে নদী, পরিবর্তন হচ্ছে নদীর গতিপথ ফলে প্রতি বছর হাজার হাজার একর জমি নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে। ভাঙ্গনে বাড়িঘর জমিজমা হারিয়ে নি:স্ব হচ্ছে শতশত পরিবার। ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়ন। দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙ্গণ হলেও ভাঙ্গন রোধে তেমন কোন কাজ না হওয়ায় এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর নিকট সহযোগিতা চান। এলাকাবাসীর শ্রম এবং অর্থ দিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আর ভাঙ্গণ রোধে কাজ শুরু হওয়ায় খুশি নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসী। উক্ত ইউনিয়নের বাসিন্দা মাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা নদী ভাঙ্গনে কারনে আমরা একেবারে নি:স্ব। সরকারিভাবে নদী ভাঙ্গন রোধে কোন কাজ না হওয়ায় আমরা এলাকাবাসী এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিজ উদ্যোগে নদী ভাঙ্গন রোধে কাজ করায় আমরা খুশি। এখন আমরা নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পাব। কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী রোকেয়া ইসলাম বলেন,বাম্বু বান্ডেলিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ বাঁধ তৈরী করা হচ্ছে। আমার বিশ্বাস বাম্বু বান্ডেলিং প্রযুক্তি ব্যাপক ভাবে সফল হবে। এই প্রযুক্তি ব্যবহা করে স্বল্পব্যায়ে নদী ভাঙ্গণ রোধে সফল হবে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: আমিনুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙ্গনের কারনে আমার ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে। এখনও ৪টি ওয়ার্ড নদী ভাঙ্গনের ঝুকির মধ্যে আছে। বাঁধ নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে আমার ইউনিয়নসহ পাশ্ববর্তী অষ্টমীরচর ইউনিয়নের ৭/৮হাজার পরিবারসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিক, ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদী ভাঙ্গণ থেকে রক্ষা পাবে। আমার জন্মস্থান এটা, আমি চেষ্টা করব চরাঞ্চলের মানুষের সবধরনের সমস্যা সমাধানে তাদের পাশে থাকতে। অবহেলিত চিলমারী ইউনিয়নের পশ্চিম তীরে বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পাবে ২টি কমিউনিটি ক্লিনিক, ৭টি সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয়, ১টি জুনিয়র হাই স্কুল ও মসজিদ-মাদ্রাসাসহ কয়েক হাজার বসতবাড়ি এবং হাজার হাজার একর ফসলী জমি। দীর্ঘ ২৫ বছর এই ইউনিয়ন এবং পাশ্ববর্তী অষ্টমীরচর ইউনিয়নের প্রায় ৮ হাজার পরিবার একইসঙ্গে বসবাস করে আসছে । কিন্তু গত বছরের বন্যায় চিলমারী ইউনিয়নের পশ্চিম তীরের প্রায় ১ হাজার একর আবাদি জমি ও প্রায় ২শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। বসতভিটা এবং আবাদি জমি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে পরিবার গুলো। অবশেষে ইউপি চেয়ারম্যানের উদ্যোগে এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগীতায় ভাঙ্গন রোধে গাছের পাইলিং এর মাধ্যমে বাঁধ নির্মানের কাজ শুরু হওয়ায় আশার আলো জেগেছে এলাকাবাসীর মাঝে। এর আগে শুক্রবার কাজের উদ্বোধন করা হয়, এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: রুকুনুজ্জামান শাহিন, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান আজাদ জামান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আছমা বেগম, থানাহাট ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মিলন, চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগ আহবায়ক আবু হোসাইন সিদ্দিক রানা, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যসহ স্থানীয় মানুষজন।