• শুক্র. মে ৯, ২০২৫

Sakaler Kagoj

The Most Popular News Portal

চিলমারীর চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মনে আশার আলো!

জানু ১২, ২০২৩

সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী:
নদীর এ কূল ভাঙ্গে গড়ে অন্য কূল। খেলছে খেলা চিলমারীর সাথে ব্রহ্মপুত্র নদ। ভাঙ্গছে চর, গড়ছে চর, ছিন্নভিন্ন হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম বাদ যাচ্ছেনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভাঙ্গনের খেলায় চলছে মানুষের দৌড়ের খেলা দিশাহারায় পড়ছে চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। সঠিক পদক্ষেপ আর নজরদারির অভাবে পিছিয়ে পড়ছে চরাঞ্চলের ছেলে মেয়েরা। দেশ আর শিক্ষা এগিয়ে গেলেও দিনের পর দিন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার সাথে সাথে পিছিয়েই যাচ্ছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার আমতলা চরসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। সেই পেছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করতে শুরু করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান। বছরের পর বছর আমতলা ও মানুষমারা চরের শতশত শিশুরা শিক্ষা বঞ্চিত খবর পেয়ে ছুটে যান নির্বাহী অফিসার শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে। নির্বাহী অফিসারের পরিদর্শনে শতশত শিক্ষার্থীদের মনে জেগেছে আশার আলো। অভিভাবকরা অনুভব করছে শান্তির সুবাতাস।
জানা গেছে, উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের আমতলা ও মানুষমারা চরে প্রায় ৫শতাধিক পরিবারের বসবাস। ভাঙ্গনের শিকার হয়ে পরিবার গুলো বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে আমতলা চরে এসে আবাস গড়ে তোলে কয়েক বছর থেকে। পরিবারের সাথে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত প্রায় ৩শতাধিক শিক্ষার্থীরাও চলে আসে উক্ত চরে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও ভাঙ্গনের শিকার হয়ে অন্য চরে চলে যাওয়ায় আমতলা চরের আশপাশের চরের শিক্ষার্থীরাও এখন দিশাহারা। শিশু শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা বিভিন্ন স্থানে বসবাস করতো নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে এই চরে ৩ থেকে ১০ বছর ধরে বসবাস করছে। তারা আরো জানায় এই চরে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় শতশত শিশুরা শিক্ষা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। শতশত শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত বিষয়টি জানতে পেরে উক্ত চরগুলোতে ছুটে যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান। ইউপি চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসীর সাথে পরামর্শ করেন এবং শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে পরিকল্পনা হাতে নেন। আমতলা ও মানুষমারা চরের আশ্রয়ণ কেন্দ্রে প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় শিক্ষিক ছেলে বা মেয়ে দিয়ে শিশু শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে বিদ্যালয় চালু করার পরিকল্পনা করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পরিদর্শন ও পরিকল্পনায় আশার আলো জেগেছে শতশত শিশু শিক্ষার্থীদের মনে। আনন্দ বিরাজ করছে অবিভাবকদের মাঝে। শিক্ষার্থী নুর হোসেন (১৪) বলেন, ৫ম শ্রেনী পাশ করার আগেই নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে এই চরে ৩/৪ বছর থেকে বসবাস করছে। আরো জানান, আমাদের চরে স্কুল নাই, তাই আমরা পড়াশুনা করতে পারিনা, ইউএনও স্যার আমাদের পড়াশুনার ব্যবস্থা করে দিবেন আমরা খুবই খুশি। শিশু আফছানা (৮) বলেন, স্কুল হবে আমরা আবার পড়তে পারবো এটা তো বড় আনন্দের। এলাকার মাজহারুল, আমেনা, আকবর আলীসহ অনেকে বলেন, এই চরে বিদ্যালয় না থাকায় আমাদের সন্তানরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রয়েছে, এখন ইউএনও স্যার এসেছেন বাচ্ছাদের পড়াশুনার ব্যবস্থা করবেন এটা তো আমাদের জন্য সৌভাগ্য। তারা আরো বলেন, সত্যি ইউএনও স্যারের এতো ভালো হয় তা এই স্যারের সাথে কথা বলে বুঝলাম। আমরা দায়িত্ব থেকেই আমি আমতলা ও মানুষমারা চরে গিয়েছিলাম জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, শিক্ষা থেকে যেন কোন শিশু পিছিয়ে না পড়ে, শিক্ষার আলোয় যেন সকলে আলোকিত হয় আমরা তা চেষ্টা করছি। এছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানা গেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভিন্ন আশ্রয়ণ কেন্দ্রে শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে বিভিন্ন উদ্দ্যোগ গ্রহন করেছেন।