• মে ৪, ২০২৪ ৯:৫৩ অপরাহ্ণ

কুড়িগ্রামে বাড়ছে ত্রাণের উপর ভরসা

অক্টো ৭, ২০২০

সাওরাত হোসেন সোহেলঃ
বন্যায় ডুবে, রিলিফে ভাসে কুড়িগ্রাম। করোনার থাবা সাথে বারবার বন্যার ধাক্কা এবারেও আটকে দিয়েছে উন্নয়নের চাকা। কর্মঠ মানুষ গুলো দিনদিন বেকার হওয়ার সাথে সাথে অলস হয়ে পড়ছে এবং ভরসা করছে সাহায্যের আর রিলিফের উপর। ফলে রিলিফের জন্য দিনের পর দিন ঘুরে সময় নষ্ট করলেও কাজের উপর ইচ্ছা শক্তি কমতে শরু করেছে এই অঞ্চলের মানুষের। দিন যাচ্ছে বাড়ছে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা, বাড়ছে ত্রাণের উপর ভরসা।
জানা গেছে, করোনার থাবার সাথে দফায় দফায় বন্যা, ভাঙ্গনকে কেন্দ্র করে জেলায় সরকারী ছাড়াও বিভিন্ন এনজিও, প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তিগত উদ্দ্যেগে ত্রাণ (রিলিফ) বিতরন শুরু হয়। বেশির ভাগ এনজিও, প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তিরা বেছে নেয় চরাঞ্চল। তালিকা জরিফ নিজ খেলায় খুশি মতো করেই দাতা সংস্থার কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ও ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে আসলেও বিতরনেও রয়েছে নানা অভিযোগ। তবে ত্রাণ দেয়ার জন্য সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিওরা মাঠে কাজ করলেও
কর্মহীন মানুষগুলোর জন্য কর্মসংস্থানের কথা বা চেষ্টা করতে লক্ষ করা যায়নি। ফলে ত্রাণের ভরসায় বসে বেকার সময় পাড় করা মানুষ গুলো দিনের পর দিন একটি স্লিপের জন্য জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা ও এনজিও কর্মীদের দ্বারেদ্বারে ঘুরে সময় পাড় করেন। প্রতি বছর খড়া, শীত, বন্যা ও ভাঙ্গনের তান্ডবলীলা এই অঞ্চলের মানুষকে অসহায় করে তোলে। বাড়িঘর, জমি হারিয়ে অসহায় এই মানুষগুলো চারদিকে অন্ধকার দেখার সাথে পরিবার পরিজন নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ে। কর্মস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় বছরের প্রতিটি সময় এদের থাকতে হয় অন্যের সাহায্য এবং সরকারী ও এনজিওদের দেয়া ত্রাণের অপেক্ষায়। অসহায় মানুষ গুলো ত্রাণ হাতে পেলেও অনেকের নেই বাসস্থান। শুধু ত্রাণের চালেই যেন এখন তাদের বড় সম্বল। ত্রাণ পেয়েও তাঁদের চোখের জল থামছে না। অসহায় মানুষ গুলোর চোখের জল না থামলেও ত্রাণ কার্যক্রমকে কাজে লাগিয়ে কতিপয় সরকারী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, এনজিও কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ফায়দা লুঠছে। অন্যের সাহায্যের আশায় বসে থাকা অনেকের পুষ্টিহীন শরীর, তাদের কর্মক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছে। রোগে তাদের শরীর আরো বেশি বয়স্ক করেছে। এদের প্রত্যেকের সন্তান বড় হয়ে আলাদা সংসার করছে। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের খোঁজ তারা রাখে না। বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়ি অথবা জমিতে কাজ করেই তাদের এক মুঠো ভাতের জোগাড় করতে হয়। বসে বসে দিন পার করতে করতে তারা হারিয়ে ফেলছে শক্তি হারিয়ে ফেলছে কর্মক্ষমতা। কর্মক্ষমতা কম হওয়ায় তাদের কেউ কাজও দিতে চায় না। ১৬টি নদ-নদী বিধ্বস্ত জেলা সর্বত্রই এ ধরনের শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা অনেক। এলাকায় কাজ না থাকায় সংসার ফেলে রেখেই অনেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে কর্মসংস্থান খুঁজে নিতে সক্ষম হলেও শারীরিক অযোগ্যতা ও অতিদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষেরা নিজ এলাকায় কষ্টে শিষ্টে দিন পার করে আসছেন। সরকারী ভাবে এই মানুষগুলোর জন্য কর্মসৃজনসহ বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও এনজিও গুলোর পক্ষ থেকে তা লক্ষ করা যায়নি। কথা হয় বিভিন্ন রাস্তায় কর্মরত মহিলাদের সাথে তারা জানান, কাজ করে অর্থ উপার্জন করে বাঁচাটা বড় সম্মানের, আর ত্রাণের জন্য সাবার দ¦ারে দ¦ারে ৭ থেকে ১০ দিন ঘুরে একটি স্লিপ মিললেও অনেকের ভাগ্যে সেটিও মেলেনা। এছাড়াও বিতরনে অনিয়ম থাকেই তাই রিলিফ নিয়ে অলস হয়ে নয় কাজ করে খেতে চায় এ অঞ্চলের মানুষ। বেশ কিছু ত্রাণ বিতরন স্থানে ত্রাণ নিতে আসা মানুষদের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্লিপ পেতে তো বিরম্বনা আছেই এর উপর ত্রাণ নিতে এসেও ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। এরপর অতিথিরা আসেন বিরতন শুরু হয়। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, এই অঞ্চলের মানুষের প্রতি সরকারের সু-নজর আছে এবং কর্মহীন মানুষের কর্মস্থলসহ অর্থনীতিযোন করার কথাও ভাবছেন সরকার।