• শুক্র. মে ৯, ২০২৫

Sakaler Kagoj

The Most Popular News Portal

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ভ্রাম্যমান আদালত করায় এসিল্যান্ডকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ বললেন সাবেক কাউন্সিলর

এপ্রি ২২, ২০২৫ #কুড়িগ্রাম, #নাগেশ্বরী
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ভ্রাম্যমান আদালত করায় এসিল্যান্ডকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ বললেন সাবেক কাউন্সিলর

স্টাফ রিপোর্টার:
অভৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করায় চারজন ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমান আদালতে জেল প্রদান করে নাগেশ্বরী সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান। আর এতে করে তার উপর ক্ষেপেছেন নাগেশ্বরী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম ইসরাইল।
বালু ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে তিনি প্রভাব দেখিয়ে ছেড়ে দেয়ার তদবীর করেন সহকারী কমিশনার (ভুমি) কে। তার এই তদবিরে সাড়া না দিয়ে জেল দেয়ায় ক্ষেপে যান সাবেক এ কাউন্সিলর। পরে তিনি তার ফেসবুকে এক পোস্ট লিখেন “সাত কর্মদিবসের মধ্যে ফ্যাসিবাদের দোসর দূর্নীতিগ্রস্থ বদমেজাজী নাগেশ্বরী উপজেলার এসিল্যান্ডকে প্রত্যাহার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে।”এদিকে এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী নেতাদের সাথে সাবেক এই
কাউন্সিলরের বেশি কিছু ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। তাতে অনেকে মন্তব্য করছেন, ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছের মানুষ ইসরাইল এখন দল পাল্টিয়ে অন্যকে ফ্যাসিস্ট বলে বেড়াচ্ছেন। চোরকে পিটিয়ে হত্যা মামলার আসামী ইসরাইল মামলা থেকে বাঁচতে একটি দলে ভিড়েছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নাগেশ্বরী পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ডের বাগডাঙ্গা বিলে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি চক্র। অভিযোগ পেয়ে গত ২০ এপ্রিল বিকেল ৩টায় অভিযান পরিচালনা করে নাগেশ্বরী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান। এসময় ভ্রাম্যমান আদালতে বালু ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম(৩৪), আলমগীর হোসেন (৩৭)কে তিন দিন এবং আব্দুল লতিফ (৩৮) ও মনিরুজ্জামানকে (৪০) বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন অপরাধে পাঁচ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ সময় বালু তোলার পাইপ ভেঙে দেয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, বালু ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে সাবেক কাউন্সিলর ভ্রাম্যমান আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। সুযোগ না পেয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। পোস্টে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ফ্যাসিবাদের দোসর, দুর্নীতিগ্রস্ত ও বদমেজাজী বলে উল্লেখ করেন। এ কর্মকর্তার অবিলম্বে প্রত্যাহারসহ বিচারের দাবি করা হয় পোস্টে।
এদিকে ওই পোস্টের স্ক্রিনসট ব্যবহার করে সহকারী কমিশনার (ভূমি)মাহমুদুল হাসান অফিসিয়াল ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন ‘অবৈধ বালু তোলা ঠেকাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা যদি অপরাধ হয়, তবে আমাকে কালই প্রত্যাহার করুন। গরীবের জমি রক্ষায় পাশে দাঁড়ানো যদি দোষ হয়, আমাকেও দোষী মানুন। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বললে যদি আমি বদমেজাজী হই, তবে বিচার করুন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুটি পোস্ট নিয়ে জনমনে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে লিখেছেন একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।
সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম ইসরাইল জানান,ফেসবুকে তিনি পোস্ট করার কথা স্বীকার করে বলেন,ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালীন সময়ে আমি ঘটনা স্থলে গেলে এসিল্যান্ড আমাকে লাঞ্ছিত করে। বিষয়টি ডিসি, ইউএনওকে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করি।ইউএনও মহোদয় বিষয়টি জানার পরে আমার কাছে দু:খ প্রকাশ করেন।
নাগেশ্বরী সহকারী কমিশনার(ভূমি)মাহমুদুল হাসান বলেন, সাবেক কাউন্সিলরকে লাঞ্ছিত করার কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি লাঞ্ছিত করার যে অভিযোগটি করেছেন তা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। কেননা তিনি ছিলেন নদী ওপারে প্রায়১৫০ মিটার দূরে। আমরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করি অন্য প্রান্তে। ভ্রাম্যমাণ আদালত চলার সময় বিক্ষুব্ধ জনগণ ড্রেজার ও পাইপ ভেঙে ফেলেছে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে যাওয়ার শংকায় আমরা চলে আসি।