হাফিজুর রহমান হৃদয়, নাগেশ্বরী:
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী সরকারি কলেজের মূল ফটকে ময়লা আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়েছে। এতে করে দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে গেছে সেখানকার শিক্ষার্থী, পথচারী ও স্থানীয় জনসাধারণ। স্বাস্থ্যঝুকি নিয়ে চলাচল করছেন শিক্ষার্থীসহ পার্শ্ববর্তী শত শত মানুষ।
এছাড়াও এখানকার পঁচা পানি ও ময়লায় এডিসমশাসহ বিভিন্ন ডেঙ্গু মশা বিস্তারের আসঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। মশা মাছির মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ বালাই ছড়িয়ে পড়ছে। তবুও এসব ময়লা অপসারণের উদ্যোগ নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ দুই প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও স্থানীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, নাগেশ্বরী পৌরসভার কলেজমোড় বাজার সংলগ্ন কলেজপাড়া এলাকার সরকারি কলেজের মূল ফটকে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লা আবর্জনার স্তুপ।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান এর আগে কলেজের এই মূল ফটকের ভিতরে বসতো কলেজমোড় বাজার। সেখানে কোনো বিধি নিষেধ না থাকায় তখন থেকে এখানকার খালটিতে ওই বাজারের মায়লা আবর্জনা ফেলে রাখা হতো। এভাবেই ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে জায়গাটি। ময়লার ভাগারের পাশেই রয়েছে গোলাপ খাঁ শিশু সদন, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়। একই সাথে রয়েছে নাগেশ্বরী সরকারি কলেজ। এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রতিনিয়ত যাওয়া আসা করেন। এমনকী গোলাপ খাঁ শিশু সদনে শতাধিক এতিম শিক্ষার্থী বসবাস করেন। শিশু সদনটি ময়ালার ভাগাড়ের সাথেই হওয়ায় সেখানে বসবাসরত শিক্ষার্থীরা দুর্গন্ধের কারণে খাওয়া-দাওয়া ও পড়ালেখা নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছে এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়াও ওই রাস্তায় যাতায়াতকারীরাও ভুগছেন বিভিন্ন রোগে।
নাগেশ্বরী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজিয়া আক্তার নিপা, নাজমুল হুদা নাসিম, ছামিউল ইসলাম সুমনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায় তারা প্রতিনিয়ত এ রাস্তায় দিয়ে কলেজে যান। কিন্তু এই ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে তাদের বমি বমি ভাব হয়। মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন তারা। এছাড়াও ময়লা থাকায় সেখানে বেওয়ারিশ অনেক কুকুর থাকায় কুকুরগুলো অনেকসময় শিক্ষার্থীদেরকে ধাওয়া করে। ফলে তারা ভয়ে এদিক দিয়ে কলেজে যাতায়াত করতে পারে না।
পথচারী রুহুল আমিন, সাইফুর রহমান জানান, এই ময়লার স্তুপের কারণে এই পথ দিয়ে যাথায়াত করা কঠিন হয়ে যায়। প্রকট দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়।
সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান খাদেমুল ইসলাম জানান, এখানকার ময়লার স্তুপের কারণে পরিবেশ দুষণের কারণে মানুষের মাঝে শাষকষ্ট, সর্দি, কাশি ও ডায়েরিয়াসহ বিভিন্ন রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে। দুর্গন্ধে নাক চিপে ধরে যাতায়াত করতে হয়। তাই এই স্তুপ অপসারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
গোলাপ খা শিশু সদনের পরিচালক বিলকিস বানু বলেন, এখানকার আবর্জনার কালো পানি থেকে জন্ম নিচ্ছে ডেঙ্গু মশাসহ ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের। আবর্জনার স্তুপ থেকে যেভাবে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে তাতে করে শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক বলেন আমাদের পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলমান রয়েছে। পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় ময়লা রাখার জন্য বিন রাখা হয়েছে। এছাড়াও কলেজের ফটকসহ যেসব জায়গায় ময়লা আবর্জনা রয়েছে সেুগলো এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্কার করা হবে।