• এপ্রিল ২৮, ২০২৪ ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

কুড়িগ্রাম শিল্প-বাণিজ্য মেলা: পর্ব-৩; ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের হুমকি!

ফেব্রু ২৬, ২০২৩

বিশেষ প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রাম চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নামে বরাদ্দ নেয়া কুড়িগ্রামের শিল্প বাণিজ্য মেলার নানান শর্ত ভঙ্গ করে চললেও মেলার বখরা নিয়ে খোদ চেম্বারে শুরু হয়েছে নানা গোলোযোগ। মেলা নিয়ে বিশেষ সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী নেতারা মেলার পক্ষে থাকলেও মেলা বন্ধ না হলে ব্যবসায়ী নেতাদের বড় একটি অংশ ঘর্মঘটের হুমকি দিয়েছেন।
শনিবার চেম্বারের মিটিং চলাকালে মেলার বখরা নিয়ে আলোচনা শুরু হলে সুবিধাভোগী নেতারা মেলার আয় দেখান মাত্র ৬লাখ টাকা। অথচ অন্যরা আগে থেকে জানতে পারেন মেলা থেকে বড় অংকের টাকা এসেছে। অন্যদিকে মেলা গভীর রাত পর্যন্ত চলার কারণে সন্ধ্যা হলেই মার্কেট ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এসব আলোচনায় শুরু হয় হট্টোগোল। এসময় কয়েকজন পরিচালক ব্যবসায়ীদের ক্ষতির চিন্তা করে মেলার সমাপ্তি দাবী করেন। এরপরও মেলা চললে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের নিয়ে তারা ধর্মঘটে নামার হুমকি দেন।
এর আগে শিল্প বাণিজ্য মেলায় জুয়া, সার্কাসসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির রিপোর্ট দৈনিক সকালের কাগজে রিপোর্ট প্রকাশিত হলে প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম বিষযটি আমলে নিয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে মেলায় সকল ধরণের অনিয়ম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।
ব্যাপক অনুসন্ধানে দেখা গেছে প্রিন্স ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট খেলার টিকেট ও মেলা প্রবেশের টিকেটসহ সব মিলিয়ে তার দৈনন্দিন আয় ৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। অথচ কুড়িগ্রাম চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল আজিজ জানিয়েছেন ‘মেলা পরিচালনাকারী প্রিন্স ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টকে অনেক অনুরোধ করে আমরা মেলা বসিয়েছি প্রায় ৫০ বছর পর। তাদের লস হলে আমাদেরকে টাকা দেবার প্রয়োজন নেই। তবু মেলা চলুক। চেম্বার মেলা করলে সরকারকে রাজস্ব দিতে হয় না। তবুও প্রতিদিন ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে এক হাজার টাকা করে জমা দেওয়া হচ্ছে। এতো নিয়ম মেনে মেলা হয় না।’
এদিকে মেলার গুরুত্বপূর্ণ শর্ত ভঙ্গ করায় পুলিশ সুপারের নির্দেশে র‌্যাফেল ড্রসহ জুয়ার আইটেমগুলো বন্ধ হলেও এর পরও মানা হচ্ছে নানা শর্ত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২৮ নং শর্তে মেলা রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশনা থাকলেও গভীর রাত অব্দি চলছে মেলা। ২৭ নং শর্ত ভঙ্গ করে জ্বালানী ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালন হয়নি। আবার সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে মেলার কার্যক্রম।
কুড়িগ্রাম চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গিয়াস খান বলেন, ‘মেলা নিয়ে ধোয়াশা সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু মেলা করে কেউ কেউ লাভবান হলেও বাজারের মূল ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমতাবস্থায় পরিচালকদের অনেকে মেলা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন। অন্যথায় ব্যবসায়ীরা ঘর্মঘট করতে বাধ্য হবে।’