রবিউল ইসলাম বেলাল, ফুলবাড়ী:
জন্ম থেকেই দুই হাত না থাকলেও সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে অন্য শিক্ষার্থীর মতই ডান পাঁ দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন অদম্য মেধাবী মানিক রহমান। পাঁ দিয়ে লিখেও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় তার হাতের লেখা মাধুর্য্যপূর্ণ। এই শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক রহমানের বাড়ী কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চন্দ্রখানা কলেজ পাড়া গ্রামে। তার বাবা মিজানুর রহমান একজন ঔষধ ব্যবসায়ী। বাবা-মায়ের বড় ছেলে মানিক রহমান। জন্মের পর থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে সে বড় হয়ে উঠেছে। তার দুটো হাত না থাকলেও পড়ালেখা থেকে কখনও পিছিয়ে পড়েনি এই লড়াকু সৈনিক মানিক। তাকে কঠোর পরিশ্রম করা শিখিয়েছেন তার বাবা। শুধু যে দুই পাঁ দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তা না । মানিক রহমানের দুটো হাত না থাকলেও সুস্থ ও স্বাভাবিক ছেলে-মেয়ের মতোই পাঁ দিয়ে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধ-বান্ধবদের সাথে মোবাইলে কথা বলে। শুধু পাঁ দিয়ে মোবাইলে কথা বলেই শেষ নয়। সে বাড়ীতে পাঁ দিয়েই কম্পিউটার টাইপ, ইন্টানেট ব্যবহারসহ বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী। মানিক ২০১৬ সালে ফুলবাড়ী জছিমিঞা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসিতে গোল্ডেন এ-প্লাস এবং ২০২০ সালে ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ফুলবাড়ী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (পাইলট) ও ফুলবাড়ী (কুড়ি)-৬৬৮ নং কেন্দ্রের ৮ নং কক্ষে সে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা দিচ্ছে।
মানিক রহমান বলেন, আমার দুটো হাত না থাকলেও আল্লাহ রহমতে পিইসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ-প্লাস ও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন জেএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ-প্লাস পাই। সে আরও বলেন, চলতি এসএসসি পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করে প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারি এবং ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।
ফুলবাড়ী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (পাইলট) স্কুলের কেন্দ্র সচিব মশিউর রহমান জানান, মানিক রহমান প্রতিবন্ধী হয়েও অন্য শিক্ষার্থীদের মতই প্রতিটি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করছে। বেঞ্চে বসে পরীক্ষা অসুবিধা হওয়ায় তাকে কাঠের চৌকিতে বসে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং বাড়তি ২০ মিনিট দেওয়াসহ সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছি।