• শনি. মে ১০, ২০২৫

Sakaler Kagoj

The Most Popular News Portal

চিলমারীতে বালু লুটের মহোৎসব

আগ ৭, ২০২২

চিলমারী প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বালু লুটের মহোৎসব চলছে। ফলে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। এছাড়া প্রতিনিয়ত ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে গৃহহারা হচ্ছেন হাজারও মানুষ। শুধু তাই নয়, ব্রহ্মপুত্রের অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে ডানতীর রক্ষা প্রকল্পসহ উপজেলা সদর।
উপজেলার দিয়ে ব্রহ্মপুত্র প্রবাহিত হয়ে নয়ারহাট, অষ্টমীরচর, চিলমারী ইউনিয়ন এখন নদের মাঝে এবং বাকি ৩টি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। ব্রহ্মপুত্র নাব্যতা হারিয়ে বর্ষা মৌসুমে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করলেও শুষ্ক মৌসুমে এটি খালে পরিণত হয়। সুযোগে প্রভাবশালীরা বালু লুটের মহোৎসবে মেতে উঠে। প্রথম দিকে ২/৪জন ব্যাক্তি শ্যালো মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করলেও তা ধিরে ধিরে আজ বৃদ্ধি পেয়ে ড্রেজার দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন ও লুটের মহোৎসব। প্রায় অর্ধশতাধিক ড্রেজার ব্রহ্মপুত্রের বুকে চালাচ্ছে তান্ডব। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন পয়েন্টে শ্যালো মেশিন ছাড়াও ব্রহ্মপুত্রের বুকের বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি। বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালালেও নিরব থাকছেন প্রশাসন। বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলায় কয়েক বছর থেকে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে এছাড়াও ডানতীর প্রকল্পে দেখা দিয়েছে ধস। নয়ারহাট ইউনিয়নের ফেইকসা এলাকার বাসীন্দারা জানান, নদী ভাঙ্গনে দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ, শতশত বাড়িঘর বিলিন হওয়ার একমাত্র কারন বালু উত্তোলন। ভাঙ্গনের সামান্য দুর থেকে উঠানো হয় বালু। তারা আরো জানান, নিষেধ বা বাধা দিতে গেলে ভয়ভীতি আর হুমকি প্রদান করছে তারা। প্রশাসনকেও জানিয়ে লাভ হয় না। ব্যংমারা, টোলোর মোড়, জোড়গাছ, বড়জাদিয়ারখাতা, ফকিরেরহাট এলাকার বাবলু, বাদল, মাহফুজার, আমজাদসহ অনেকে বলেন, আপনাদের কয়া কি লাভ হইবে, সকলে ট্যাকা খায় আর চুপ হয়ে থাকে। এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, বালু তোলা নিষেধ এটি অবৈধ তাহলে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মন বালু উত্তোলন হচ্ছে, বালু তুলে পাহাড় বানিয়ে রাখা হচ্ছে, নদী জুড়ে ড্রেজার দিয়ে চলছে বালু তোলার উৎসব তাহলে তা কি দেখে না প্রশাসন। এলাকাবাসী বলেন, বালু উত্তোলনের কোন নিয়ম নীতি না থাকায় যে যেখানে পাচ্ছে ইচ্ছা মতো করছে বালু উত্তোলন ফলে পূর্বের তুলনায় বর্তমানে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে শতশত মানুষ হারাচ্ছে সহায় সম্বল। প্রতিদিন চিলমারী থেকে শত শত ট্রাক, ট্রাকটর বালু যাচ্ছে বিভিন্ন প্রান্তে। ট্রাকটর প্রতি বালু ৫ থেকে ৬শ’ ও ডামট্রাক ৫হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা দরে বিক্রি হলেও সরকারের রাজস্ব ভান্ডার একেবারেই শূন্য থাকছে। এলাকাবাসী বলেন বালু বিক্রির ও ড্রেজারের মালিকরা লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক বুনে গেছেন তাই এই ব্যবসায় অনেকেই ঝুকে পড়ছে। বালু উত্তোলনের জন্য তাদের কাছে প্রশাসনিক অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রশাসনের অনমুতি নেই কিন্তু পাওয়ারম্যানের অনুমতি রয়েছে। তবে সেই পাওয়ারম্যানের নাম বলতে তারা রাজি হননি। তবে বালু উত্তোলনে নেতৃত্ব কিছু প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যাক্তি জরিত আছেন বলে জানা যায়। সচেতন মহল জানান, অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে বালু মহল করলে হয়তো সমাধান হবে। এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং আমরা বালু মহলের জন্য আবেদন করেছি আশা করি তা দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।