• শনি. মে ১০, ২০২৫

Sakaler Kagoj

The Most Popular News Portal

কুড়িগ্রামে আলুর বাজারে ধস

সেপ্টে ৩০, ২০২১

বিশেষ প্রতিবেদক:
আলুর অব্যাহত দরপতন আর ক্রেতার অভাবে কুড়িগ্রামের হিমাগারে বিপুল পরিমাণ আলু অবিক্রিত থাকায় আশঙ্কায় দিন গুনছেন আলু চাষিরা। মৌসুম শেষ হয়ে এলেও হিমাগারে এখনও সংরক্ষিত আছে অর্ধেকেরও বেশি আলু। বাজারে মিলছে না ক্রেতাও।
লোকসান কমাতে কুড়িগ্রামের আলু চাষি, হিমাগার মালিক ও ব্যবসায়ীরা আলু রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
গত বছর আলুর ভালো দাম পাওয়ায় চলতি বছর বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ করেন কৃষকরা। এ বছর আলুর উৎপাদ খরচ বেশি। তার ওপর প্রতি বস্তা আলুতে হিমাগার ভাড়া বেড়েছে প্রায় ৪০-৬০ টাকা। অথচ আলুর দাম দিনে দিনে কমছে। ফলে আলু চাষিদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও হতাশ।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার শিবরাম গ্রামের আলু চাষি হাবিবুর রহমান জানান, প্রতি কেজি আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে খরচ পড়েছে ১৭-১৮ টাকা। অথচ বর্তমানে আলু বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে সাড়ে ১০ টাকায়। লোকসানের কারণে কৃষকরা আলু বিক্রি করতে চাচ্ছে না। তার উপর ক্রেতার সংকটও রয়েছে।
সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বাজারের আলু ব্যবসায়ী সোলেমান আলী জানান, মোকামে চাহিদা কম থাকায় তারা আলু কিনতে পারছে না। গত বছর করোনাকালে ত্রাণ হিসেবে আলু বিতরণ ও বিদেশে আলুর রপ্তানি হলেও এবার ভিন্নচিত্র। তাই আলুর চাহিদা দিন দিন কমছে। কমছে দামও। এক ট্রাক আলুর কিনে বিক্রির আগেই পড়ে যাচ্ছে দাম।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামে হিমাগার রয়েছে চারটি। এগুলো হচ্ছে এ হক হিমাগার লিমিটেড, সেকেন্দার বীজ হিমাগার লিমিটেড, বাবর কোল্ড স্টোরেজ প্রাইভেট লিমিটেড ও মোস্তফা কোল্ড ষ্টোরেজ লিমিটেড। কুড়িগ্রামে এই মৌসুমে ছয় হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর আাবাদ হয়। উৎপাদন হয়েছে এক লাখ ৫২ হাজার মেট্রিকটন আলু। চারটি হিমাগারে সংরক্ষিত হয়েছে মাত্র ৫২ হাজার মেট্রিকটন আলু।
ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিক সুত্রে জানা গেছে, এখনও অর্ধেকর বেশি আলু মজুদ আছে। বিক্রির সময় আছে মাত্র দু’মাস। আলুর রপ্তানির উদ্যোগ না নিলে ঋণের বোঝা বৃদ্ধিসহ বিপুল লোকসানের আশঙ্কায় আছেন হিমাগার মালিকরা।
সেকেন্দার বীজ হিমাগারের মালিক সেকেন্দার আলী জানান, তার হিমাগারে সংরক্ষিত দুই লাখ বস্তা আলুর মধ্যে এখনও এক লাখ ২০ হাজার বস্তা আলু অবিক্রিত আছে। স্বল্প সময়ে অবশিষ্ট আলুর সবগুলো বিক্রির সম্ভাবনা নেই। তার উপর চাহিদা কম থাকায় বিক্রি হচ্ছে খুবই কম।
কুড়িগ্রামের এ হক হিমাগার লিমিটেড এর ম্যানেজার মোমিন মিয়া জানান, কৃষক ও ব্যবসায়ীদেও সংরক্ষিত আলুর ওপর বিপুল পরিমাণ ঋণ দেওয়া হয়েছে, কাজেই আলু বিক্রি না হলে হিমাগার মালিকরাও ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়বেন।
জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মাকেটিং অফিসার মো: নাসির উদ্দিন জানান, আলুর বাজার নিয়মিত মনিটর করা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে প্রতিকেজি আলুতে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের লোকসান হচ্ছে প্রায় ছয় টাকারও বেশি। এই পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ করতে উর্দ্ধতন মহলের কাছে লেখা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।