• এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ৮:২৯ অপরাহ্ণ

নাগেশ্বরীতে দুধকুমার নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত

অক্টো ২৭, ২০২০

হাফিজুর রহমান হৃদয়, নাগেশ্বরী:
কুড়িগ্রামে নাগেশ্বরীতে দুধকুমার নদীর তীব্র ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়ে পড়ছে শত-শত পরিবার। ভাঙ্গন আতঙ্কে দিশাহারা নদী তীরবর্তী পরিবারগুলো। ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে ভাঙ্গনের শিকার পরিবারগুলোকে। এছাড়াও ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে কয়েকশ বাড়ি, স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ, ফসলী জমি, সুপারী বাগান, বাঁশ বাগানসহ বিভিন্ন প্রজাতীর গাছ। এমতাবস্থায় সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়ন ও বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম। ফলে ভাঙ্গন রোধে সরকারের হস্তক্ষেপ চান নদ-নদীর তীরবর্তী মানুষজন।
সরেজমিনে উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের বড়বাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা যায় একটি মসজিদ ভাঙ্গার কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয়রা। আবার অনেকে নিজ বাড়ি সরানো এবং অপরিপক্ক ধান কাটতে ব্যস্ত ভাঙ্গনের মুখে থাকা মানুষজন।
স্থানীয়রা জানান, গত ১৫ দিনের তীব্র ভাঙ্গনে শতাধিক একর ফসলি জমি, সুপারী বাগানসহ প্রায় শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে, কয়েকশ বাড়ি, মসজিদ, মাদরাসা ও স্কুলসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজার। ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে রায়গঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বড়বাড়ী গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুরে জুরে।
অপরদিকে ৪র্থ ও ৫ম দফা বন্যায় হাজিরমোড় এলাকার শতাধিক বাড়িঘর বিলীন হয়ে যায় নদীগর্ভে। শুধু রায়গঞ্জ ইউনিয়নই নয় ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে বামনডাঙ্গা, বেরবিাড়ী, নুনখাওয়া ও ননারাণপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম।
আর এই ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে নদীর তীরে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক ফাউন্ডেশন এবং রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির রায়গঞ্জ ইউনিয়ন শাখাসহ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও স্থানীয়রা।
বড়বাড়ী এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়নদী ভাঙ্গনের ফলে বাড়ী সরানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন নুর মোহাম্মদ, কমলা বেগম, রজব আলী। তারা জানায় তাদের শেষ সম্বলটুকুও নদীর পেটে যাচ্ছে। এবার আর মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকবে না। ভাঙ্গনের মুখে থাকা, আছর উদ্দিন, ফরিদুল ইসলাম কোরবান আলী, মদিনা আলী জানায় নদী ভাঙ্গনের ফলে ককয়েকবার বাড়ী সরাতে হয়েছে। আবারও ভাঙ্গনের মুখে রয়েছেন। এবার ভাঙলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে কোথায় আশ্রয় নেবেন এ নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তারা।
রায়গঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আ.স.ম আব্দুল্যাহ আল-ওয়ালীদ মাছুম বলেন, ভাঙ্গনের শিকার হওয়া এবং ভাঙ্গনের মুখে থাকা পরিবারগুলোর খবর রাখছি এবং তাদের তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া আমরা বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। কেননা নদী ভাঙ্গন রক্ষায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরি।
সরকারের নিকট নদী ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর আহমেদ মাছুম বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী তাদের সহযোগিতা করা হবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, ভাঙ্গন রোধে প্রকল্প করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।