• সোম. জুন ২৩, ২০২৫

Sakaler Kagoj

The Most Popular News Portal

ড্রাইভিং লাইসেন্সের চাহিদা প্রতিদিন বাড়লেও সরবরাহে ব্যর্থ হচ্ছে বিআরটিএ

অক্টো ১৩, ২০২০

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চাহিদা অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করতে পারছে না। অথচ প্রতিদিনই ড্রাইভিং লাইসেন্সের চাহিদা বাড়ছে। অথচ বিআরটিএর বিরুদ্ধে চাহিদামাফিক ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করতে না পারার অভিযোগ অনেক পুরনো। এবার খোদ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এ অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে এক সভায় এ অভিযোগ তোলেন মন্ত্রী। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জাল, অবৈধ ও ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ঠেকাতে বিগত ২০১১ সালে বিআরটিএ ইলেকট্রনিক চিপযুক্ত ডিজিটাল স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স চালু করে। দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি শুরু থেকেই কাজটি করে আসছে। এ কার্ড চালুর পর থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে ১৮ লাখ ৯০ হাজার ৩৩২টি স্মার্টকার্ড বিতরণ করে। স্মার্টকার্ড বিতরণের জন্য ২০১৬ সালে দ্বিতীয় দফায় চুক্তিবদ্ধ হয় টাইগার আইটি ও বিআরটিএ। চুক্তি অনুযায়ী ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে সারা দেশে ১৫ লাখ কার্ড বিতরণের দায়িত্ব পায় টাইগার আইটি। সেজন্য কার্ডপ্রতি মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৪৭২ টাকা ৬০ পয়সা। তবে চুক্তির আগেই বেশির ভাগ স্মার্টকার্ড শেষ হয়ে যায়। তারপর থেকেই কার্ড সংকট শুরু হয়।
সূত্র জানায়, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের সংকটের পেছনে রয়েছে ইলেকট্রনিক চিপযুক্ত ডিজিটাল স্মার্টকার্ডের সংকট। দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা বিপুলসংখ্যক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে এ কার্ড সংগ্রহ করেও আবেদনকারীদের চাপ সামাল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্তের আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিআরটিএর কার্যালয়ে ইলেকট্রনিক চিপযুক্ত ডিজিটাল স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের ৩ লাখ আবেদনকারী অপেক্ষায় ছিলেন। আর কার্ডের জন্য আবেদন প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিলেন আরো ২ লাখ চালক। কভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যে দীর্ঘদিন বিআরটিএর কার্যক্রম বন্ধ ও সীমিত ছিল। তাতে কার্ডের জন্য অপেক্ষারত ও আবেদন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা চালকের সংখ্যা বর্তমানে ৮ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
সূত্র আরো জানায়, স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স সংকট মোকাবেলায় গত ফেব্রুয়ারিতে বিআরটিএ জরুরি ভিত্তিতে ৪ লাখ স্মার্টকার্ড কেনার উদ্যোগ নেয়। সাময়িকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার উদ্দেশ্যে ওই উদ্যোগ নেয়া হয় বর্তমানে যে পরিমাণ চাহিদা আছে তা ওই চার লাখ কার্ড দিয়ে তা পূরণ করা হবে। বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে বিআরটিএ স্মার্টকার্ডগুলো কিনবে। ওসব কার্ড দিয়ে বিদ্যমান চাহিদা মেটানো হবে। অন্যদিকে ৪০ লাখ কার্ড কেনার জন্য একটি দরপত্র প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে তা সম্পন্ন হলে বিআরটিএতে আর কোনো কার্ডের সংকট থাকবে না।
এদিকে এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে এক সভায় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, চাহিদা অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করতে বিআরটিএ ব্যর্থ হচ্ছে। অথচ ড্রাইভিং লাইসেন্সের চাহিদা প্রতিদিনই বাড়ছে। বিআরটিএ কিছু সেবা অনলাইনের মাধ্যমে প্রদান করতে শুরু করেছে। তবে মানুষ এখনো সব ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছে না। ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের জন্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন ও লাইসেন্স প্রদান কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।