স্টাফ রিপোর্টার:
কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের উত্তর মাঝের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী ভাঙন স্থানান্তর হওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল অবস্থা ছিল।পাঠদানের পরিবেশ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল হতাশা ব্যঞ্জক।বর্ষা মৌসুমে নৌকা করে পারাপারে ভয়ে অনেক অভিভাবক বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতেন না। যে দু-চারজন নিয়মিত ছিল তাদের অভিভাবকগণ বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে দুঃশ্চিন্তায় থাকতেন।
বিষয়টি দৈনিক সকালের কাগজ পত্রিকায় প্রিন্ট ও অনলাইনসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়। উপজেলা প্রশাসনের নজরে এলে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ রাশেদুল হাসান বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন।পরে উপজেলা প্রশাসনের আর্থিক সহযোগিতায় খালের উপরএকটি কাঠের সেতু তৈরি করা হয়।গত তিনদিন ধরে ওই কাঠের সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছেন শিক্ষক শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসী।যাতায়াতের ভোগান্তি দূর হওয়ায় বিদ্যালয়টির শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ গ্রামবাসী ইউএনও’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন।
বিদ্যালয়টির ৪র্থ শ্রেনির শিক্ষার্থী মোছাঃ আফরোজা খাতুন বলেন, খালে সব সময় পানি থাকায় আমরা পানির কারনে স্কুলে আসতে পারতাম না। আসলেও অনেক সময় পা পিছলে বই খাতা জামা কাপড় ভিজে যেত। সেদিন আর ক্লাস করতে পারতাম না। সেই ভোগান্তি দুর হয়েছে। এখন আমরা সেতু পেয়েছি। আমাদের আর পানিতে ভিজে স্কুলে যেতে হবে না। এ জন্য ইউএনও স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।
অভিভাবক মোঃ আব্দুল আলীম বলেন, নদী ভাঙনের কারনে স্কুলটি স্থানান্তর করে মাঝের চরে এনে ভালো করলেও যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাইনি। এখন সেতু হয়েছে গত একসপ্তাহ ধরে আমার মেয়ে দুটো স্কুলে যাচ্ছে। এখন বাচ্চাদের নিয়ে আর দুঃশ্চিন্তা নাই। তবে স্থায়ী ব্রিজ হলে ভালো হত।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ নুর ইসলাম বলেন, কাঠের সেতু হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি দুর হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগ সত্যি প্রশংসার দাবিদার।
প্রধান শিক্ষক মোঃ আলতাফ হোসেন বলেন, স্কুলের যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় অনেক অভিভাবক তাদের বাচ্চাকে এ স্কুলে দিতেন না।আর যারা এ স্কুলের শিক্ষার্থী তাদের অনেকেই এমন অবস্থায় ক্লাসে আসতো না।এখন সেই ভোগান্তি দুর হয়েছে। গ্রামবাসীও উপকৃত হয়েছে।আশা করছি স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ার পাশাপাশি আগামী বছর থেকে নতুন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বাড়বে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ রাশেদুল হাসান বলেন, নদী ভাঙনের কারনে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা হয়েছিল।এ বিদ্যালয়টিতে যাতায়াত ও অবকাঠামোগত সমস্যা ছিল।পরে বিদ্যালয়টির পাঠদানের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হলেও খাল পারাপারের কারনে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি ছিল খুবই কম।পরে সেতু নির্মানের উদ্যোগ নিই। কংক্রিটের খুঁটি দিয়ে কাঠের সেতু তৈরি করে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দুর করা হয়েছে। ভবন নির্মানেরও বরাদ্দ এসেছে।দ্রুত নির্মানের কাজ হবে বলে জানান তিনি।