• সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩ ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ

দুধকুমার নদের ভাঙ্গনের সাথে চলছে ঘরবাড়ি ভাঙ্গা-গড়ার খেলা

সেপ্টে ১০, ২০২৩

হাফিজুর রহমান হৃদয়, নাগেশ্বরী:
কয়েকদফা বন্যার পর নেমে গেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, সঙ্কোষ, গঙ্গাধরসহ সবকটি নদ-নদীর পানি। আর পানি কমার সাথে থে শুরু হয়েছে নদ-নদীর তীব্র ভাঙ্গন। গেলো এক মাসে দুধকুমার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের ফান্দের চর গ্রামের ৪০টি বসতভিটা।
ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে মসজিদ, বাজার ও বসতভিটাসহ কৃষি জমি। ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটছে নদীপাড়ের মানুষের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে নুনখাওয়া ইউনিয়নের ব্যাপারীরচর, বামনডাঙ্গার মুড়িয়া, বন্ধু বাজার এবং নারায়নপুর ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে ভাঙ্গন কবলিতরা আশ্রয় নিচ্ছে অন্যের বাড়িতে। আবার কেউ কেউ পৈত্রিক ভিটে ছেড়ে চলে যাচ্ছে অন্যত্র। এছাড়াও শতশত বিঘা কৃষি জমি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। ভাঙ্গন কবলিতরা বলছেন নদী ভাঙ্গনের সাথে সাথে ঘরবাড়ি ভাঙ্গাগড়ার খেলায় ক্লান্ত হয়েছেন তারা। বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন হাজারও পরিবার। নদ-নদীর ভাঙ্গনের খেলা চলমান থাকলেও এ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাথা ব্যথা নেই বলে অভিযোগ নদীপাড়ের মানুষের। দুধকুমার নদের ডান তীর রক্ষার কাজ চলমান থাকলেও কাজের ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তারা।
রায়গঞ্জ ইউনিয়নের ফান্দেরচর এলাকার আব্দুল আজিজ (৭২) জানান, অনেক জমিজমা ছিলো তার। দুধকুমার নদী ভাঙ্গনে একে একে ১৭ বার বাড়িঘর ভেঙ্গে সরিয়ে নিতে হয়েছে তাকে। একদিকে ভেঙ্গে অন্যদিকে চর জাগলে সেখানেই মাথা গোঁজার ঠাঁই করেন তিনি। এরপরও শেষ রক্ষা হয়রি তার। আবারও ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে তার বসতভিটা। এখন তার ৪ বিঘা জমি নদীগর্ভে রয়েছে। এছাড়াও মোজাম্মেল হকের (৪২) বসতভিটা ভেঙ্গেছে ৮ বার, আব্দুল খালেকের (৪৫) ভাঙ্গা পড়েছে ৩বার। মাত্র সপ্তাহ খানেক আগে নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়ায় ঘরবাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে রেখেছেন শুকুর আলী।
ওই এলাকার দেরাজ আলী জানান তার অভাবের সংসারে ৫ জন ছেলে-মেয়ে নিয়ে বহুকষ্টে দিনাতিপাত করছেন তিনি। তার বাড়ি এখন নদীর একদম কিনারে। হয়ত মাত্র ২-৪ হাত পরিমান জায়গা ভাঙ্গলেই তার বাড়িটি আবারও বিলিন হবে সর্বনাশা নদীর পেটে। এরপর পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় থাকবেন এমন এক ইঞ্চি মাটিও নেই তার। ফলে ভাঙ্গন আতঙ্ক, চাপাকষ্ট আর দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটে তার। ফলে এর স্থায়ী সমাধান চান নদীপাড়ের মানুষ।
কুড়িগ্রাম জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন দুধকুমার নদের ভাঙ্গন রোধে কাজ চলমান রয়েছে। তবে অপরপ্রান্তে ভাঙ্গনের খবর জেনেছি। জরুরি প্রয়োজনে ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।