স্টাফ রিপোর্টার: অর্থ আত্নসাত, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালুর প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন ওই ইউনিয়নের ১০ সদস্য। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অনাস্থা আনার কারণ জানিয়েছেন ওই ইউপি সদস্যরা। দীর্ঘ ৪ বছরে ওই ইউনিয়নে কোনো মাসিক সভা না হওয়ায় পরিষদে চলছে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। অন্যদিকে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যেদের বিরোধে উন্নয়নবঞ্চিত হচ্ছেন ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ দেওয়ার পরও অচলাবস্থা নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগি ইউপি সদস্যরা।
১০জন ইউপি সদস্য স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে জানাযায়, শহিদুল ইসলাম শালু রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই অর্থ আত্মসাত. স্বেচ্ছাচারিতাসহ. নানা অনিয়ম, দুর্নীতি করে আসছেন। ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন খাত থেকে পাওয়া ৩৪ লাখ ৩৬হাজার ৩৬৪টাকার মধ্যে ২০লাখ ৩৬হাজার ৩৬৪টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে দুটি দোকান ঘর বরাদ্দের ৩লাখ ও পুরাতন ভবনের তিনটি দোকানের জামানত ও ভাড়া বাবদ তিন লাখ টাকাসহ মোট ২৬লাখ ৩৬হাজার ৩৬৪টাকা আত্মসাত করেন। নিয়ম-নীতির কোনো তোয়াক্কা না করেই জন্ম সনদ ও ট্রেড লাইন্সের টাকা নয়ছয়, এলজিএসপি ও নন-ওয়েজ, বয়স্ক, বিধবা ,প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফসহ বিভিন্ন সুবিধাভোগিদের নামের তালিকা প্রণয়নে সমন্বয় ছাড়াই চেয়ারম্যানের একক সিন্ধান্ত নেন। ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন প্রলোভন, ভয়ভীতি ও ক্ষমতার দাপটে ৩০০টাকার নন-জুডিশিয়াল স্টাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছেন চেয়ারম্যান শালু।
রৌমারী সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান লাল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, এর আগে ২০১৯ সালের ২৬ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক),ঢাকা বরাবর ওই চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো ফল পায়নি ভুক্তভোগি সদস্যরা। এ ছাড়াও ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। ওই কমিটি কর্তৃক ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও আজও তা আলোর মুখ দেখেনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু বলেন,‘আমার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, এলজিএসপি, কাবিখা,কাবিটার কাজ না করেই ওই ইউপি সদস্যরা আমার কাছে বিল চায় সেটা দিতে অস্বীকার করলেই তাদের কাছে আমি ভালো না। সদস্যদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। তারা আমাকে কু-প্রস্তাব দিয়েছে তাতে রাজী না হওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন।’ ইউপি সদস্যদের কাছে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন ওই চেয়ারম্যান।
অনাস্থার বিষয়টি নিশ্চিত করে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান বলেন, এ বিষয়ে একটি অনুলিপি পাওয়া গেছে। এর আগে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে। আগামী ৩দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
রৌমারীতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ৪বছর ধরে মাসিক সভা বন্ধ
