সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী:
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লাফিয়ে বাড়ছে তেলের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে নৌ-ভাড়া। মালামাল বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা, কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শতশত শ্রমিকরা। পাথর ও কয়লা আমদানিতে ব্যবসায়ীদের ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করলেও শ্রমিকদের আয়ের চাকা যাচ্ছে আটকে। একদিকে খুশির খবর আর অন্য দিকে শ্রমিকদের মানবেতর জীবন যাপন। বাড়ছে কষ্ট, দিন যাচ্ছে খেয়ে না খেয়ে। চিলমারীর কুলি শ্রমিকরা এখন বিপাকে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় নদী বন্দরকে ঘিরে কুলি শ্রমিকদের বুক ভরা আশা জাগলেও তেলের মূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় তা এখন দুশ্চিন্তায় পরিনত হয়েছে। সাথে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে পড়েছে তারা। এক সময় কম খরচে নৌকার মালামাল আনা নেওয়া করা ব্যবসায়ীরা দ্বিগুনের দ্বিগুন খরচ দিয়ে মালামাল বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে ফলে অনেকে নৌ-পথের ভরসা ছেড়ে দিয়েছে। তেলের মুল্য বৃদ্ধি সাথে ভাড়া বেড়ে দ্বিগুনের দ্বিগুন ফলে কমেছে ঘাটে লোড আনলোড। একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অন্যতিকে লোড আনলোড কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে শ্রমিকরা। এছাড়াও শুরু হয়েছে ভারত থেকে পাথর ও কয়লা আমদানি। আমদানিকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের আয় বাড়লেও, কমেছে কুলি শ্রমিকদের আয়ের পথ, সাথে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। প্রায় ৬মাস থেকে উপজেলার বিভিন্ন ঘাটের কুলি শ্রমিকরা হতাশ আর দুশ্চিন্তায় কাটাচ্ছে দিন। বন্যা আর বর্ষায় সময় বন্ধ হয়ে পড়ে শ্রমিকদের আয়ের উৎস সাথে ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় কমতে শুরু করেছে পন্যবাহী নৌকার সংখ্যা এর উপর সরাসরি ভারত থেকে চিলমারীর বিভিন্ন ঘাট পয়েন্টে পাথর ও কয়লা লোড আনলোড হওয়ায় বিপাকে পড়েছে শ্রমিকরা। শ্রমিকরা জানান, তেলের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা মালামাল আনা নেওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে এবং ইতি পূর্বে বুড়িমারিসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাক জোগে বিভিন্ন ঘাটে পাথর ও কয়লা আসতো আমরা তা লোড আনলোড করে টাকা পেতাম এতে রোজগার ভালো হতো, বউ বাচ্চা নিয়ে ভালোই কাটতো আমাদের দিন কিন্তু এখন সরাসরি ভারত থেকে বোলগেটে পাথর ও কয়লা আসছে এবং বিভিন্ন ঘাটে ও পয়েন্টে মেশিনের মাধ্যমে লোড আনলোড করছে ফলে আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে এবং আয় রোজগার বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফকিরেরহাট ঘাটের কুলি শ্রমিক এর সভাপতি বকুল মিয়া বলেন, একেতো নৌ-পথে পন্য আনা নেওয়া বন্ধ হয়ে পড়েছে তার উপর ভারত থেকে বোলগেটে করে পাথর আসছে এটি ব্যবসায়ীদের জন্য লাভ ও খুশির খবর হলেও দিন মজুর ও কুলি শ্রমিকদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে, গুটি দু’চারজনের লাভ হলেও শতশত শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে করছে মানবেতর জীবন যাপন। তিনি আরো জানান, ইতি পূর্বে শ্রমিকরা দিনে ৫ থেকে ৭শত টাকা রোজগার করলেও বর্তমানে ১শত টাকাও আয় করতে পারছেনা। শ্রমিক ছক্কু জানান, বলার কিছু নাই সবার দৃষ্টি বড় বড় ব্যবসায়ী আর ধনীদের দিকে শ্রমিক, দিনমজুর আর গরীব মানুষের দিকে কেডা দেখে। কাছুয়া বলেন, উন্নয়ন হইছে আর হামরা না খায়া থাকি, হামার উন্নয়ন কই গেল। হামরা খেয়ে থাকি আর না খেয়ে থাকি তাতে সরকার বা বড়লোকের কি মন্তব্য করে অপর শ্রমিক আশরাফ বলেন, হামার ছবি তুলে আর কি করবেন, বেচান ছবি দেখে বড়বড় দায়িত্বে থাকাদের কামাইয়ের ব্যবস্থা করে দেন। কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, শ্রমিকরা যেন সমস্যায় না পড়ে তারা যেন কর্মহীন হয়ে না পড়ে বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বেকার হয়ে পড়েছে শ্রমিক করছে মানবেতর জীবন যাপন
