সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী:
অনেক আগেই চলে গেছে বর্ষা, শরৎ কাল শেষের দিকে হেমন্তের আগমন আর এই সময় বন্যার হানা। হঠাতেই অসময়ের বন্যায় চরাঞ্চলের কৃষকের স্বপ্ন ভেঙ্গে ঝড়াচ্ছে চোখের জল। হঠাতেই ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধিতে দিশাহারা চরাঞ্চলের কৃষক। কয়েক কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে বলে আশঙ্কা করছে কৃষকরা। কাঁচা ও আধাপাকা ধান কেটে নিলেও ভুট্টা, পিয়াজ, বাদাম, কালাইসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। হঠাতেই পানি বৃদ্ধি ও চোখের সামনে সাজানো ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যেতে দেখে দিশাহারা কৃষকরা এখন বিপাকে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্রের পানি হঠাতেই বৃদ্ধি পাওয়া, টানা বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের বেশির ভাগ ফসলি জমি। ইতি মধ্যে ধান, ভুট্টা, পিয়াজ, বাদামসহ বিভিন্ন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে কৃষকরা কাঁচাসহ আধাপাকা ধান কেটে নিচ্ছে। তবে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে সদ্য লাগানো ভুট্টা, বাদাম, কালাই, পিয়াজসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আবারো নতুন করে চাষ করতে হবে কৃষকদের। এতে করে চরাঞ্চল কৃষকদের আকস্মিক বন্যার থাবায় কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে। অনেক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বিভিন্ন ফসল চাষ করলেও সব স্বপ্ন আর আশা ভাসিয়ে নিলো অসময়ের আকস্মিক বন্যা। অষ্টমীরচরের আঃ খালেক, দোলোযার, তারমিয়াসহ অনেকে জানান, বুক ভরা আশা আর স্বপ্ন নিয়ে হাজার হাজার টাকা খরচ করে ধান, ভুট্টা, কালাই, বাদাম চাষ করেছিলাম, হঠাৎ ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি, সাথে বৃষ্টি আর আকস্মিক বন্যা আমাদের সব স্বপ্ন শেষ করে দিলো, আমরা এখন পুরো বছর কি ভাবে চলবো। কৃষক আওয়াল, শাহিন বলেন, অনেক আশা ছিল ধান কেটে ঘরে তুলবো, পাওনা দাওনা শোধ করবো কিন্তু আকস্মিক বন্যা সব কেড়ে নিলো, তাই বাধ্য হয়ে কাঁচা ও আধাপাকা ধান কেটে নিচ্ছি। শুধু তারা মিয়া, দোলোযার, শাহিনরা নয় শতশত কৃষকের ধান, ভুট্টা, কালাই, পিয়াজ, বাদামসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের কৃষক। চোখের সামনে স্বপ্নকে ভাঙ্গতে দেখে তারা এখন বিপাকে। কৃষকরা জানায়, ইতি মধ্যে ধান, ভুট্টা, পিয়াজ, কালাইসহ যে সকল ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে তা নষ্ট হয়ে যাবে ফলে তাদের গুনতে হবে কোটি কোটি টাকার লোকসান। তারা আরো বলেন হঠাতে এই বন্যায় ২শত হেক্টরের বেশি ফসলি জমি পানিতে তালিয়ে গেছে। চরের আশরাফুল ইসলাম মোল্লা বলেন, অসময়ের এই বন্যা চরাঞ্চলের কৃষক যা ক্ষতি করলো এটি পুরো বছরের একটি ধাক্কা। আকস্মিক বন্যায় চলাঞ্চলের কৃষকরা বেশ ক্ষতিতে পড়বেন স্বীকার করে উপজেলা কৃষি অফিসার কুমার প্রণয় বিষান দাস বলেন, হঠাতেই ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টির কারনে প্রায় দেড়শত হেক্টর বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে, তবে পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমান নির্ধারন করা যাবে।
চিলমারীতে আকস্মিক বন্যার থাবায় কোটি টাকা ক্ষতিতে কৃষক
